Hindustan Times
Bangla

রাবণ-পুত্র মেঘনাদকে সবচেয়ে বীর বলা হয় কেন? তাঁর কাহিনি শুনলে চমকে যাবেন

মেঘনাদকে কেন ইন্দ্রজিৎ নামে ডাকা হয়, সেটিও দারুণ এক কাহিনি।

রামায়ণ অনুযায়ী রাবণ-পুত্র মেঘনাদ সমগ্র মানব, দানব, অন্যান্য সৃষ্টি ও দেব-দেবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বীরযোদ্ধা ও একমাত্র অতি মহারথী।

বীরত্বের ভাগ অনুযায়ী শুধু ‘মহামহারথীরা’ (যেমন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহাদেব) ইন্দ্রজিৎ অপেক্ষা বেশি বীর।

মেঘনাদের মা ছিলেন ময়দানবের কন্যা মন্দোদরী। জন্মের সময় মেঘনাদ বজ্রনাদের ন্যায় চিৎকার করেছিলেন। তাই তার নামকরণ হয় মেঘনাদ।

ভিন্নমতে, মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করতেন বলে তাঁর নাম মেঘনাদ। আবার দেবরাজ ইন্দ্রকে পরাভূত করেছিলেন বলে তিনি ইন্দ্রজিৎ নামেও পরিচিত। 

বাল্যকালেই মেঘনাদ ব্রহ্মাস্ত্র, পাশুপতাস্ত্র, বৈষ্ণবাস্ত্র প্রভৃতি দৈব অস্ত্রশস্ত্রের অধিকারী হয়েছিলেন। তার গুরু ছিলেন দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য। 

মেঘনাদ নাগরাজ শেষনাগের কন্যা সুলোচনাকে বিবাহ করেছিলেন।

রাবণ মেঘনাদকে সঙ্গে নিয়ে দিগ্বিজয়ে বার হয়ে স্বর্গ আক্রমণ করেন। মেঘনাদ শিবের বরে মায়াপ্রভাবে অদৃশ্য অবস্থায় যুদ্ধ করে ইন্দ্রকে পরাভূত ও বন্দি করেন।

এক বছর বাদে ব্রহ্মা ইন্দ্রকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন। তিনি মেঘনাদকে ইন্দ্রজিৎ নাম দেন এবং ইন্দ্রের মুক্তির প্রতিদানে মেঘনাদকে বরদান করতে চান। মেঘনাদ অমরত্বের বর চান।

ব্রহ্মা তা দিতে রাজি হননি। তখন মেঘনাদ এই বর চান যে যুদ্ধে যাওয়ার আগে তিনি ইষ্টদেব অগ্নির পূজা করবেন এবং অগ্নিসম্ভূত অশ্ব দ্বারা চালিত রথে যুদ্ধে গেলে তিনিই অজেয় হবেন।

ব্রহ্মা তা মেনে নেন। কিন্তু বলেন, যজ্ঞ অসমাপ্ত রেখে যুদ্ধে গেলে তাঁর মৃত্যু হবে।

লঙ্কার যুদ্ধের তৃতীয় দিনে লক্ষ্মণ জানতে পারেন মেঘনাদ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে যজ্ঞ সম্পাদনা করছেন। এই যজ্ঞ সম্পূর্ণ হলে মেঘনাদ অজেয় হয়ে যাবেন।

বিভীষণ লক্ষ্মণকে যজ্ঞাগারে নিয়ে যান। যজ্ঞাগারে মেঘনাদ অস্ত্র স্পর্শ করতেন না। তিনি প্রথমে যজ্ঞের বাসন ছুঁড়ে লক্ষ্মণকে অচেতন করে দেন।

কিন্তু অস্ত্রাগারে যাওয়ার সময় পান না। তার আগেই লক্ষ্মণের জ্ঞান ফেরে এবং তিনি নিরস্ত্র মেঘনাদকে হত্যা করেন।