বন্যপ্রাণীর দেহ অথবা দেহাংশ বিশেষ করে দাঁত, শিং প্রভৃতি পাচার রুখতে বিশেষভাবে সক্রিয় রয়েছে বনদফতর। সাধারণত জঙ্গলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বন্য প্রাণীর দেহাংশ উদ্ধার হয়ে থাকে। বিশেষ করে হরিণের শিং, হাতির দাঁত- এগুলি কখনও প্রাকৃতিক নিয়মে খসে পড়ে আবার কখনও দুই প্রাণীর মধ্যে সংঘর্ষে ভেঙে পড়ে। সেগুলি চোরাচালানকারীদের হাতে পড়লে চড়ামূল্যে পাচার করে থাকে। ফলে সেগুলি যাতে কোনওভাবেই চোরাচালানকারীদের হাতে না পড়ে তারজন্য এই সমস্ত বন্য প্রাণীর দেহাংশ জঙ্গলে ঘুরে সংগ্রহ করে থাকে বন দফতর। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেই ব্যবস্থার অংশ হিসেবে উচ্চ তাপমাত্রায় হরিণের একাধিক সিং পুড়িয়ে ফেলল বন দফতর। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার একটি কারখানায় উচ্চ তাপমাত্রায় হরিণের মোট ৬২ টি শিং পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ হরিণের শিং–সহ গ্রেফতার দুই ব্যক্তি, কার্শিয়াং হয়ে নেপাল পাচারের ছক অধরা
জানা গিয়েছে, গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে জঙ্গল থেকে শিংগুলি উদ্ধার করেছিল বন দফতর। মুকুটমণিপুর লাগোয়া বনপুখুরিয়া এলাকায় ডিয়ার পার্কে বহু হরিণ রয়েছে। সেই পার্ক থেকে বিভিন্ন সময়ে হরিণের ভেঙে পড়া শিং উদ্ধার করে আসছিল বন বিভাগ। এরপর সেগুলি নিজেদের হেফাজতে রেখে দিয়েছিল তারা।
বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগের এক আধিকারিক জানান, আন্তর্জাতিক সাইটস চুক্তি অনুযায়ী, বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুড়িয়ে ফেলতে হয়। সেই কারণে এই সমস্ত শিং নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। ওই কারখানা একটি চুল্লিতে উচ্চ তাপমাত্রায় শিংগুলিকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বন্য প্রাণীর দেহাংশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা বাঁকুড়ায় এই প্রথম নয়। এর আগেও বিষ্ণুপুর বন বিভাগ, বাঁকুড়া উত্তর ও দক্ষিণ বনবিভাগ মিলিতভাবে তাদের সংগ্রহে থাকা হাতির একাধিক দাঁত পুড়িয়ে নষ্ট করেছিল। গত ডিসেম্বর মাসে সব মিলিয়ে হাতির ৫৭ টি দাঁত একই পদ্ধতিতে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছিল। যেহেতু চোরাচালান রুখতে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পুড়িয়ে ফেলার নিয়ম রয়েছে তাই এবার হরিণের শিং পুড়িয়ে ফেলা হল। বন বিভাগের এক আধিকারিক জানান, মূলত বন্যপ্রাণীর দেহাংশ যাতে চোরা কারবার না হয় তার জন্য সেগুলি পুড়িয়ে ফেলার নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম মেনেই এবার হরিণের শিং পুড়িয়ে ফেলা হল।