আইপিএল মানেই রানের ফুলঝুরি। বোলারদের ছাতু করে ব্যাটাররা ঝোড়ো মেজাজে প্রচুর রান করে থাকেন। তা বলে বোলাররাও যে সব সময়ে পিছিয়ে থাকেন, এমনটা একেবারেই নয়। আইপিএলে বোলাররাও মোটেও খুব খারাপ পারফরম্যান্স করেন না। তা তাঁদের নামের পাশে উইকেট সংখ্যা এবং বাকি পরিসংখ্যানগুলিই বড় প্রমাণ। আর প্রত্যেক বছর যিনি আইপিএলে সবচেয়ে বেশি উইকেট পান, তাঁর মাথায় ওঠে বেগুনি টুপি বা ‘পার্পল ক্যাপ’। আইপিএলের ইতিহাসে দু'বার করে বেগুনি টুপি জিতেছেন ডোয়েন ব্র্যাভো এবং ভুবনেশ্বর কুমার। মোট আট সংস্করণে ভারতীয় বোলাররা পার্পল ক্যাপ পেয়েছেন। আইপিএলের ১৬টি সংস্করণে কারা কারা পার্পল ক্যাপ জিতেছেন, মনে আছে? না হলে এক ঝলকে দেখে নিন, কোন বার কে পেয়েছেন পার্পল ক্যাপ। ২০০৮ আইপিএল- আইপিএলের প্রথম সংস্করণ হয় ২০০৮ সালে। সেবার পাকিস্তানের প্লেয়ার সোহেল তনভির পার্পল ক্যাপ জেতেন। প্রথম বছর পাকিস্তানের প্লেয়াররাও আইপিএল খেলেছিলেন। সোহেল ১১ ম্যাচের ১১ ইনিংসে ২২টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ৬.৪৬। সেরা পারফরম্যান্স ৬/১৪। সোহেল সেবার রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেছিলেন। এবং প্রথম সংস্করণে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল রাজস্থান। ২০০৯ আইপিএল- দ্বিতীয় সংস্করণে ভারতের আরপি সিংয়ের মাথায় ওঠে পার্পল ক্যাপ। সেই বছর আরপি ডেকান চার্জার্সের হয়ে খেলেছিলেন। আর ডেকান সেই বছর চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ডেকানও হায়দরাবাদেরই টিম ছিল। এখন এই নামে কোনও টিম নেই। বদলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এখন আইপিএলে অংশ নিচ্ছে। আরপি ২০০৯-এ ১৬ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে ২৩টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ৬.৯৮। সেরা পারফরম্যান্স ৪/২২। ২০১০ আইপিএল- এই সংস্করণে ভারতের প্রজ্ঞান ওঝা পার্পল ক্যাপ জেতেন। তিনিও ডেকান চার্জার্সের প্লেয়ার হিসেবেই এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। ২০১০ সালে প্রজ্ঞান ১৬ ম্যাচের ১৬টি ইনিংসে ২১টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ৭.২৯। সেরা পারফরম্যান্স ৩/১১। ২০১১ আইপিএল- শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা ২০১০ সালে আগুনে পারফরম্যান্স করেছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। তিনি সেবার ১৬ ম্যাচের ১৬টি ইনিংসে ২৮ উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ৫.৯৫ এবং সেরা পারফরম্যান্স ছিল ৫/১৩। চতুর্থ সংস্করণে পার্পল ক্যাপের দখল নিয়েছিলেন মালিঙ্গা। ২০১২ আইপিএল- দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে বল হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন মর্নি মর্কেল। প্রোটিয়া বোলার ১৬ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে ২৫টি উইকেট নিয়ে পার্পল ক্যাপ জিতেছিলেন। তাঁর ইকোনমি রেট ছিল ৭.১৯। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৪/২০। ২০১৩ আইপিএল- ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়েন ব্র্যাভো ২০১৩ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ১৮ ম্যাচের ১৮ ইনিংসে ৩২টি উইকেট নিয়েছিলেন। জিতেছিলেন পার্পল ক্যাপ। তাঁর ইকোনমি রেট ছিল ৭.৯৫। সেরা পারফরম্যান্স ৪/২২।
২০১৪ আইপিএল- ভারতের মোহিত শর্মা আইপিএলের সপ্তম সংস্করণে পার্পল ক্যাপের দখল নেন। তিনি সেবার চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছিলেন। ১৬ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে ২৩টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ৮.৩৯। সেরা পারফরম্যান্স ৪/১৪। ২০১৫ আইপিএল- এই সংস্করণেও ডোয়েন ব্র্যাভোর মাথায় ফের পার্পল ক্যাপ ওঠে। এই বছরও তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়েই খেলেছিলেন। ১৭ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে ২৬টি উইকেট নিয়েছিলেন ব্র্যাভো। ইকোনমি রেট ছিল ৮.১৪। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৪/২২। ২০১৬ আইপিএল- ভারতের ভুবনেশ্বর কুমার নবম সংস্করণে পার্পল ক্যাপ জেতেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ১৭ ম্যাচের ১৭ ইনিংস খেলে ২৩টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ৭.৪২। সেরা পারফম্যান্স ৫/১৯। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে হায়দরাবাদই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০১৭ আইপিএল- এই বছরও ফের পার্পল ক্যাপের দখল রাখেন ভুবনেশ্বর কুমারই। তিনি এবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়েই ১৪ ম্যাচের ১৪ ইনিংসে ২৬টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ৭.৫। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৫/১৯। ২০১৮ আইপিএল- অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু টাই এই সংস্করণে পার্পল ক্যাপের দখল নেন। পঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলে ১৪ ম্যাচের ১৪ ইনিংসে ২৪টি উইকেট নিয়েছিলেন টাই। ইকোনমি রেট ৮.০০। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৫/১৭। ২০১৯ আইপিএল- দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলে ১৭ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে ২৬টি উইকেট নিয়ে পার্পল ক্যাপের দখল নেন। ইকোনমি রেট ছিল ৬.৬৯। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৪/১২। ২০২০ আইপিএল- কাগিসো রাবাডা দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ২০২০ আইপিএলে পার্পল ক্যাপের দখল নেন। প্রোটিয়া বোলার ১৭ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে ৩০টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ৮.৩৪। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৪/২১। ২০২১ আইপিএল- রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে হার্ষাল প্যাটেল বল হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন ২০২১ সালে। সেই সঙ্গে তিনি পার্পল ক্যাপের দখল নেন। ভারতের বোলার ১৫ ম্যাচের ১৫ ইনিংসে ৩২টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ৮.১৪। সেরা ৫/২৭। ২০২২ আইপিএল- রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ভারতের তারকা স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল ১৭ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে ২৭টি উইকেট নিয়ে পার্পল ক্যাপ জেতেন। ইকোনমি রেট ছিল ৭.৭৫। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৫/৪০। ২০২৩ আইপিএল- গত সংস্করণে ভারতের তারকা পেসার মহম্মদ শামি বল হাতে আগুনে মেজাজে ছিলেন। ১৭ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে ২৮টি উইকেট নিয়ে তিনি পার্পল ক্যাপ দখল করেন। তাঁর ইকোনমি রেট ৮.০৩। সেরা পারফরম্যান্স ৪/১১।