২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে এখনও স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। এরপর কী বলছেন চাকরিহারারা?
তাঁরাও হাপিত্য়েশ করে বসেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে। আসলে মূল সমস্যাটা হয়েছে কারা যোগ্য আর কারা যোগ্য নন এটা কিছুতেই আদালতে নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না এসএসসি কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত যারা যোগ্য বলে দাবি করছেন নিজেদের তাঁদের কী হবে সেই প্রশ্ন উঠছে। কার্যত এসএসসি কর্তৃপক্ষের এই ছিনিমিনি খেলার দায় কেন চাকরিপ্রার্থীরা নেবেন সেই প্রশ্নও উঠেছে।
এদিকে চাকরিহারাদের একাংশ ইতিমধ্য়েই আইনি পথে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা আপাতত সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির দিকেও তাকিয়ে আছেন। কারণ সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে আগামী সোমবার। সেই দিন এসএসসি নতুন কিছু হাজির করাতে পারে কি না সেই প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে চাকরি-হারারা কার্যত দিশেহারা। একাধিক চাকরিপ্রার্থী জানিয়েছেন,মামলাটা তো খারিজ করে দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। সেক্ষেত্রে হয়তো এবার আমাদের কথাও শুনবেন। অন্তত আমরা আমাদের বক্তব্যটা আদালতে বলার সুযোগ পাব।
কার্যত অদ্ভূত একটা পরিস্থিতি। এই বাজারে চাকরি যাওয়া মানে একেবারে অথৈ জলে পড়ার অবস্থা। তবে সাধারণ মানুষের একাংশের দাবি, যারা যোগ্য তাদের চাকরি যাওয়াটা অত্যন্ত ভয়াবহ। কিন্তু এসএসসি এর দায় নেবে না কেন? কেন এতজনকে অবৈধভাবে চাকরি দেওয়া হল? কেন তাদের জন্য় বঞ্চিত হবেন যোগ্যরা? কেন জনগণের করের টাকায় বেতন পাবেন অযোগ্যরা?
এই সব প্রশ্নের উত্তর মেলে না কিছুতেই।
আমরা আগামী দিনে সব কিছুকে একসঙ্গে জুড়ে এসএলপি করছি। সুপ্রিম কোর্টের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। স্থগিতাদেশ হলে হয়তো একটু স্বস্তি পেতাম। কোর্টে নাকি নিয়ামক সংস্থা বলেছে সেকেন্ডারি মেটেরিয়াল তাদের কাছে আছে। সেখান থেকে তারা যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রস্তুত করতে পারবেন। জানিয়েছেন চাকরিহারা এক শিক্ষিকা।
নিয়োগকারী সংস্থার ভুলের জন্য় এটা হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য় আমরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছি। জানিয়েছেন অপর এক শিক্ষিকা।
এসবের মধ্য়েই এক শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের শোরগোল পড়তে শুরু করেছে। ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন ওই স্কুল শিক্ষক। এমনটাই বলা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্ট গত সপ্তাহে ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল। সেই রায়ের পর থেকেই মানসিক অবসাদে ছিলেন শিক্ষক। আর সোমবার ওই স্কুল শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই স্কুল শিক্ষকের নাম বীরেন্দ্রনাথ সোরেন (৩৭)। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার মাচাতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপরশোলে।
মৃতের স্ত্রীর দাবি, ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়ে ২০১৯ সালে যোগদান করেছিলেন বীরেন্দ্রনাথ। তবে হাইকোর্টের রায় শোনার পর কিছুটা চুপচাপ ছিলেন তিনি। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দাবি, বীরেন্দ্রনাথ ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেলেও তিনি শারীরশিক্ষার শিক্ষক ছিলেন। ফলে যে প্যানেল বাতিল করা হয়েছে, সেই প্যানেলে তাঁর নাম ছিল না।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার শাসকদল জলঘোলা করা শুরু করে কি না সেটাই দেখার। কারণ এই আশঙ্কাটাই করছিলেন অনেকে।