শীতলকুচিতে গুলি চালানোর ঘটনার পর থেকেই চর্চা কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। তার উপর তিনি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। সেই ‘বিতর্কিত’ ব্যক্তিটি হলেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধর। যিনি এখন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী জমা দিয়েছেন তাঁর হলফনামাও। আর এখানেই দেখা যাচ্ছে, শেষ অর্থবর্ষে দেবাশিষ ধরের সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিন গুণ। ৮ লক্ষ টাকা থেকে ইনকাম বেড়ে হয়েছে ২৫ লক্ষ টাকা। আর তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে ওই হলফনামা থেকে আরও জানা যাচ্ছে, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার তথা বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর ২০১৯–২০ অর্থবর্ষে আয় করেছিলেন ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার ১১০ টাকা। আর সেটাই ২০২০–২১ অর্থবর্ষে বেড়ে হয় ১১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩২৮ টাকা। তারপরের অর্থবর্ষ ২০২১–২২ অর্থবর্ষে তিনি আয় দাঁড়ায় ১১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৯০ টাকা। আবার ২০২২–২৩ অর্থবর্ষে সেই আয় নেমে আসে ৮ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৩১ টাকায়। কিন্তু ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে সেটা আবার তুঙ্গে উঠে পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪১১ টাকা। এটাই বেশ চোখে পড়ার মতো। উত্তর দিনাজপুরের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রায়গঞ্জ শাখার অ্যাকাউন্টে আছে ৩৭ লক্ষ ৪১ হাজার ৭০৫ টাকা ৯৮ পয়সা। সল্টলেকের অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক শাখায় ৪৪ হাজার ২৮২ টাকা ১৭ পয়সা আছে। সল্টলেকেরই পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে আছে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ২১১ টাকা ১৮ পয়সা। সবমিলিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্টে আছে ৩৯ লক্ষ ৩ হাজার ৯৬৬ টাকা।
আরও পড়ুন: ‘আদালতের যুক্তি ধরে নিলে কলকাতা হাইকোর্টও তুলে দিতে হবে’, দাবি অভিষেকের
অন্যদিকে এই বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন। আর এনএসসি–সহ একাধিক বিমা প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। তার নামে ৭০ গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনার গয়না রয়েছে। নগদ, সেভিংস এবং নানা বিনিয়োগ মিলিয়ে তার কাছে থাকা মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ হল ৮৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৩৮.৩৩ টাকা। তবে কোনও চাষ বা অচাষযোগ্য জমি নেই প্রাক্তন আইপিএস অফিসারের। দুটি বাড়ি আছে তাঁর। স্থাবর সম্পত্তি ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা থাকলেও তাঁর নিজের কোনও যানবাহন নেই। বিজেপি প্রার্থীর নামে কোনও ঋণ নেই বলেই হলফনামায় দাবি করা হয়েছে। যদিও সম্পত্তির পরিমাণ বিশাল।
এছাড়া আর্থিক তছরুপের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর সঙ্গে দেবাশিস ধরের আর্থিক লেনদেন ঘটে বলে অভিযোগ। যার তদন্তে নামে সিআইডি। এই প্রেক্ষিতেই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। এই বিষয়ে দেবাশিস ধর বলেন, ‘আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। সে ছ্যাবলামি ধরা পড়ে গিয়েছে। এফআইআরে অনুমানের ভিত্তিতে আমার নাম যোগ করা হয়। কিন্তু ফাঁসাতে চেয়েও তার হদিশ পায়নি।’ দেবাশিস ধর একজন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা হলফনামায় জানিয়েছেন, ১৯৯৭ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে ফিজিক্সে স্নাতক হন।