আজ, রামনবমী। আর এবার রাজ্য–রাজনীতিতে অন্যরকম ছবি ধরা পড়ল। আজ সর্বত্র সবাই রামনবমীতে মেতে উঠেছে। শহর থেকে জেলায় সেই ছবিই ধরা পড়েছে। এই রামনবমী উপলক্ষ্যে শাসক–বিরোধীর সব নেতা–নেত্রীকেই নানা সাজে সেজে মেতে উঠতে দেখা গিয়েছে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী এক ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসাবেই ধরা দিলেন। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ তিনি সাধারণ কোনও নেতা নন। নিজের সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ডহারবারে শিব মন্দিরে গিয়ে পুজো দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রামনবমীর দিনে বুঝিয়ে দিলেন তিনি একটু আলাদাই।
এখন বৈশাখের তীব্র দাবদাহ চলছে। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষজন গরমে কাহিল। তার মধ্যেই চলছে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার–পর্ব। আর এমন আবহে সকলের মঙ্গল কামনায় বাখরাহাটের বড় কাছারি মন্দিরে পুজো দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। এই পুজো দিয়ে তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে গোটা ঘটনাই পোস্ট করেছেন। তাতে আরও কৌতূহল তৈরি হয়েছে সকলের। কেন শিব পুজো করলেন অভিষেক? এই প্রশ্ন অনেকেই। তবে সকালে তিনিও রামনবমীর শুভেচ্ছা সকলকে জানিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের একঝাঁক নেতা–নেত্রী রামনবমীতে আজ মেতে উঠেছেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এই শিব মন্দির বাবা বড় কাছারির থান বলেই পরিচিত। আর কথিত আছে, এই মন্দির খুবই জাগ্রত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সেই শিব মন্দিরে আসেন। সাংসদ হওয়ার পর অভিষেক এখানে একটি তোরণও নির্মাণ করে দেন। আজ, বুধবার দুপুরে বড় কাছারির মন্দিরে এসে পুজো দেন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। অভিষেককে দেখার জন্য মন্দিরের বাইরে ভিড় উপচে পড়ে। মন্দিরের বাইরে অপেক্ষারত দর্শনার্থীদের সঙ্গে সেলফিও তোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন এখানে যা কিছু চাওয়া হয় তাই পাওয়া যায়। পুজো দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ বাবা বড় কাছারি মন্দিরে ভক্তিভরে পুজো দিলাম। মা মাটি মানুষের মঙ্গল কামনায় ব্রতী হলাম। পরমেশ্বরের আশীর্বাদে বছরের প্রত্যেকটি দিন সকলের হয়ে উঠুক আলোকোজ্জ্বল।’
আরও পড়ুন: ‘মহব্বত কা শরবত’ পান করে খুশি রামভক্তরা, সম্প্রীতির ছবি দেখল হাওড়ার পিলখানা
তবে রামনবমীর দিনে শিব মন্দিরে পুজো দিয়ে কোনও বার্তা স্পষ্ট করতে চাইলেন অভিষেক বলে অনেকে মনে করছে। রামনবমী বিজেপির তৈরি করা রাজনৈতিক ন্যারেটিভ থেকে নিজেকে আলাদা করলেন বলেও অনেকের মত। ঠিক কী বুঝিয়ে দিলেন চাইলেন অভিষেক? ধর্মাচরণে আছেন তিনি, অথচ ধর্ম নিয়ে রাজনীতিতে নেই। এমন কোনও বার্তাই দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও অভিষেকের কথায়, ‘সুখ, সমৃদ্ধি, আনন্দ আসুক প্রত্যেকটি পরিবারে। শান্তি, সম্প্রীতি এবং সৌভ্রাতৃত্বের অটুট বন্ধনে আবদ্ধ হোক বাংলা। সকল আসুরিক শক্তির বিনাশ হোক। বিভেদকামী–বিচ্ছিন্নতাবাদী অপশক্তির পতন ঘটুক এবং মানবতার সুরে গড়ে উঠুক গোটা সমাজ’।