রাজনৈতিক ময়দানে দ্বন্দ্বটা আছেই। তবে তার বাইরেও একটা সম্পর্ক তো থাকেই। আর আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগ সেই সৌজন্যের সম্পর্ককেই যেন ভোটপর্বে ফের সকলের সামনে তুলে ধরলেন।
একেবারে ঝাঁ ঝাঁ দুপুর। সেই সময় প্রচারে বেরিয়েছেন মিতালি বাগ। প্রচার করতে করতে তিনি পৌঁছে গেলেন আরামবাগের বিজেপি বিধায়ক তথা আরামবাগের বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের বাড়ি। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্য়ে এলাকায় দ্বন্দ্ব কিছু কম নয়। তবে এদিন ভোট প্রচারে বেরিয়ে সেই বিপরীত শিবিরের নেতার বাড়িতেই হাজির তৃণমূলের প্রার্থী।
তবে শুধু তিনি গেলেন এমনটাই নয়, বিমান ঘোষের বাবা মায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করলেন তিনি। তাঁদের কুশল কামনা করেন তিনি।
এদিকে বিমান ঘোষ এলাকায় অত্যন্ত সক্রিয় বিজেপি নেতা। গত বিধানসভা ভোটে তাঁকে রীতিমতো লড়াই করে এই আসনটি পেতে হয়। আর সেই বিজেপি বিধায়কের বাড়িতেই হাজির তৃণমূলের প্রার্থী। এদিকে তাঁর বাড়িতেই মিতালিকে দেখতে পেয়ে নানা কথা রটতে থাকে।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গোটা রাজ্য জুড়ে তৃণমূল নেতাদের যখন বিরাট প্রতিপত্তি তখন মিতালী নেহাতই সাধারণ ঘরের মানুষ। মাটির বাড়িতে থাকেন তিনি। পেশায় তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। বর্তমানে তিনি হুগলি জেলা পরিষদের সদস্য। জেলা তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তাঁকে বেশ সক্রিয়ভাবেই পাওয়া যায়। সেই মিতালিই এবার তৃণমূলের প্রার্থী। অপরূপা পোদ্দারকে প্রার্থী না করে সেখানে করা হয়েছে মিতালিকে।
সেই মিতালিই এদিন চলে যান বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে যা দেখে হতভম্ব এলাকার বাসিন্দারা। হলটা কী!
রবিবার সকালে প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার মিতালিকে নিয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন। তৃণমূলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও ছিলেন। মন্দিরে পুজো দিয়ে তাঁরা প্রচার করছিলেন। এমন সময়ই তাঁরা ঢুকে পড়েন একেবারে বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে। এরপর একেবারে বিধায়কের বাবা মাকে টুক করে প্রণাম।
মানস মজুমদার জানিয়েছেন, সকলের বাড়িতেই তৃণমূলের প্রার্থী যাচ্ছেন। বিজেপি নেতা বিমান ঘোষের বাড়িতেও ভোটপ্রচার করা হয়। তাঁর বাবা মা বয়স্ক মানুষ। তাই গুরুজনের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছেন মিতালি। আর বিমান ঘোষ সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন বলেন, বিজেপি সৌজন্য়ের রাজনীতি জানে। উনি আমাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়ির সকল সদস্য তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তবে শুধু আমার পরিবার নয়, আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের মানুষ তৃণমূলকে একটা ভোটও দেবে না।