দশ বছর বয়স থেকে একটানা নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে আসছে বোম্বে হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে যে এই ভয়ঙ্কর অপরাধের শিকার হওয়ার পরে, ভিকটিমের মানসিক অবস্থার ভীষণ অবনতি হয়েছে। নিম্ফোম্যানিয়াক হয়ে উঠেছেন ধর্ষিতা। তাই বিচারপতি পৃথ্বীরাজ চ্যাবনের একক বেঞ্চ ধর্ষণকারী অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে, এই অপরাধ এতটাই জঘন্য যে যেকোনও ব্যক্তির বিবেককে প্রবলভাবে নাড়া দিতে পারে।
- কিশোরীর ডায়েরি থেকে প্রকাশ্যে বিস্ফোরক সত্য
নির্যাতিতার বাবা এই অভিযোগ করেছেন যে তিনি কাজের জন্য দুবাই গিয়েছিলেন। এবং তাঁর পিছনে অভিযুক্ত এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেই কিশোরীর সুযোগ নিয়েছিলেন। এরপর ওই অভিভাবকরা আদালতকে আরও জানিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের মেয়ের ঘরে একটি ডায়েরি দেখতে পেয়ে অপরাধ সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। ২৭ পৃষ্ঠার ডায়েরিতে নির্যাতিতা নিজের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। তাঁর আদেশেই এই ডায়েরির উদ্ধৃতি দিয়ে হাইকোর্ট বলেছে যে ভিকটিমটির মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা এমন যে তা বর্ণনা করতে শব্দ কম পড়বে।
আদালত আরও বলেছে, এ ধরনের জঘন্য অপরাধের কারণে ভিকটিম নিম্ফোম্যানিয়াক অর্থাৎ অনিয়ন্ত্রিত যৌন ইচ্ছার শিকার হয়ে উঠেছেন। ডায়েরিতে ভিকটিম লিখেছেন, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াকালীন অভিযুক্তরা তাঁকে ধর্ষণ শুরু করেন। অভিযুক্তরা কিশোরীর যৌন আকাঙ্ক্ষা বাড়াতে ওষুধ খাওয়াতেন বলেও দাবি করা হয়েছে। এই ডায়েরি পড়ার পরে, ২০২১ সালে, নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযুক্ত এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপর আদালত থেকে আসামির স্ত্রী জামিন পেলেও মূল অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্তের পরিবার।
- অভিযুক্তের স্ত্রীও সমান অপরাধী- হাইকোর্ট
অভিযুক্তের স্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে মামলাটি চাপা দিয়েছিলেন বলে জোর দিয়েছে হাইকোর্ট। অতএব, তিনি এই অপরাধের জন্য সমানভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ডায়েরিতে লেখা বিষয়গুলো উল্লেখ করে হাইকোর্ট বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, ভিকটিম তাঁর মাকে ধর্ষণের কথা আগেই জানিয়েছিলেন কিন্তু তিনি নীরব থেকেছিলেন। আদালত আরও বলেছে যে, এই মামলায় আসামিদের জামিন দেওয়া একেবারেই ঠিক হবে না কারণ পুরনো দিনের বিষাক্ত ক্ষত এখনও নির্যাতিতার হৃদয়ে তাজা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আরও একটি রেপ কেসে আদালতের রায় সামনে এসেছে। নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।