ধর্ষণের অভিযোগের জেরে এক মামলায় অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাবাসের সাজা শোনাল মুম্বইয়ের এক সেশন কোর্ট। কোর্ট বলছে, একজন মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী মহিলার তরফে সঙ্গমে সম্মতি দেওয়ার ঘটনা অপ্রাসঙ্গিক। এই মামলায় অভিযুক্তের দাবি ছিল, ২৩ বছর বয়সী ওই মহিলার সম্মতিক্রমেই তারা সহবাস করে। এছাড়াও অভিযুক্তের দাবি, তাঁরা বিয়ের পথে এগোচ্ছিলেন। সে মুসলিম ও তরুণী হিন্দু হওয়ায় তরুণীর মা বাবা এই বিয়েতে সম্মত ছিলেন না। অভিযুক্তের দাবি, তরুণী মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী নন।
২৪ বছরের অভিযুক্ত যুবককে ১০ বছরের কারাবাসের সাজা এই মামলায় শুনিয়েছে কোর্ট। মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। কোর্টে অভিযোগ রয়েছে, এক মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী মহিলাকে ধর্ষণ ও তাঁকে গর্ভবতী করে তোলার মামলায়। এই মামলায় কারুর পুলিশ স্টেশনে ২০১৯ সালে রুজু হয়েছে। সেদিন তরুণীর মা তাঁর মেয়ের ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। মেয়ের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করার পরই তিনি জানতে পারেন মেয়ে গর্ভবতী। তারপরই মেয়েকে জিজ্ঞাসা করতে, মেয়ে জানিয়েছিল, সে কিছুদিন আগে এক দোকানে গিয়েছিল। সন্দেহ হয় তরুণীর মায়ের। জানতে পারেন, কাছেই এক সেলুন কর্মরত যুবক তাঁর মেয়েকে ভুলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল একটি জায়গায়। চকোলেট দেওয়ার নাম করে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন তরুণীর মা। সেই অভিযোগ নিয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। সেলুনের বাকি কর্মীরাও দেখে ছিলেন যে, ওই তরুণীকে নিয়ে ওই যুবক কোথাও হেঁটে যাচ্ছে। এই মামলায় অভিযুক্তের দাবি, সেদিন দু'জনের সম্মতিতেই সঙ্গম হয়। শারীরিক সম্পর্কে ওই মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীরও সম্মতি ছিল বলে অভিযুক্তের দাবি। এই দাবি শুনে কোর্ট বলে, ‘সম্মতি গঠনের জন্য, কার্যটির তাৎপর্য এবং নৈতিক প্রভাবের জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে বুদ্ধিমত্তার অনুশীলন থাকতে হবে। নির্যাতিতা, যার মানসিক দক্ষতা অনুন্নত, আইনে বলা যায় না যে তিনি সম্মতিতে যৌন সংসর্গের শিকার হয়েছেন।’
ওই মানসিক অবসাদে আক্রান্ত সম্পর্কে কোর্ট সাফ বলছে, ‘তাঁর মানসিক অক্ষমতা বিবেচনা করে, তাঁর সম্মতি অপ্রাসঙ্গিক এবং আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত দ্বারা ধর্ষণ করা হয়েছে বলা যেতে পারে।’ কোর্ট বলছে, ‘একজন মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলা কখনওই আইনতভাবে সম্মতি দিতে পারেন না, যার জন্য আবশ্যিকভাবে কোনও ঘটনার প্রভাব বোঝা দরকার।’ এদিকে, কোর্টকে ওই নির্যাতিতা জানিয়েছেন, এক অন্ধকার জায়গায়, তাঁকে জোর করে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে। তবে সেই তরুণী জেরার মুখে জানিয়েছেন যে, ওই অভিযুক্ততে তিনি পছন্দ করতেন, আর তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন।