ভোটে মিথ্যা প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠল বিদায়ী সাংসদ তথা বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি দাবি করেছেন যে একটি স্কুলকে স্মার্ট ক্লাস রুম তৈরি জন্য তিনি ১০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। তবে স্কুলের তরফে পালটা দাবি করা হয়েছে, কোনও অর্থ তাদের দেওয়া হয়নি। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনার তদন্ত উচিত বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
আরও পড়ুনঃ বসে গেল শান্তনু ঠাকুরের সভার মঞ্চ, দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন BJP প্রার্থী
লোকসভা নির্বাচনের আবহে জোর কদমে প্রচারে নেমেছেন সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। শান্তনু ঠাকুরও প্রচার চালাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে সাংসদ হিসেবে গত ৫ বছরে কী কাজ করেছেন তার খতিয়ান তুলে ধরে একটি লিফলেট প্রকাশ করেছেন শান্তনু ঠাকুর। তাতে তিনি দাবি করেছেন, গোবরডাঙা খাঁটুরা হাই স্কুলে আধুনিক স্মার্ট ক্লাসরুমের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন নিজের সাংসদ তহবিল থেকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম করার জন্য কোনও অর্থ জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়নি। আবার স্কুলটির প্রধান শিক্ষকও স্মার্ট ক্লাসরুম গড়ে তোলার জন্য কোনও টাকা পাননি বলে দাবি করেছেন। প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের দাবি, বিদায়ী সাংসদের দাবি ভুল। সোশ্যাল মাধ্যমে একটি ভিডিয়ো বার্তায় শিক্ষক জানান, স্মার্ট ক্লাস রুম নির্মাণের জন্য তাদের স্কুলকে ১০ লক্ষ টাকা কখনও দেওয়া হয়নি। অথচ সাংসদ সেই খরচের হিসাব দেখাচ্ছেন।
যদিও শান্তনু সেন দাবি করেছেন, তিনি স্মার্ট ক্লাস রুম তৈরির জন্য ১০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিলেন। কিন্তু, তারপর স্কুল কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে আর কিছু জানায়নি। পালটা শান্তনু এ বিষয়ে গোবরডাঙ্গা পুরসভার প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
শান্তনুর অভিযোগ, গোবরডাঙার পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত প্রধান শিক্ষককে ভয় দেখিয়ে কাজ না করার জন্য বাধ্য করেছিলেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল শিক্ষক। পুরপ্রধানও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এবিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন।
এই ঘটনার পরেই শান্তনুর বিরুদ্ধে সাংসদ টাকা জালিয়াতি করার অভিযোগ তুলেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। এদিকে, শুক্রবার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে গোবরডাঙায় সভা করতে গিয়ে শান্তনুকে আক্রমণ করেন ব্রাত্য বসু।
তিনি জানান, খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন স্কুলটি কোনও অনুমোদন পায়নি। সাংসদ তহবিলের কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। এমন ঘটনায় তদন্ত হওয়া উচিত। এটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বিজেপির প্রার্থী মিথ্যা প্রচার করছেন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন।