বয়স মাত্র ৬ বছর। এখন থেকে রোগা থাকতে হবে ছেলেকে। স্থূলতা ভালো দেখাচ্ছে না। এমনটাই ভেবে নিজের ৬ বছরের বাচ্চা ছেলেকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ট্রেড মিলে দৌড়োতে বাধ্য করেছিলেন বাবা। সামলাতে না পেরে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে শিশুটি। আমেরিকার এমনই একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা সামনে এসেছে। ভাইরাল হয়েছে ভিডিয়োও, যেখানে একজন বাবা ছেলের স্থূলতা কমানোর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে একটি ট্রেড মিলে দৌড়োনো চালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন। বাচ্চার মৃত্যুর পর মামলা কোর্টে উঠলে তার মা মর্মান্তিক ঘটনার ভিডিয়োটি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
- বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বাবার নাম ক্রিস্টোফার গ্রেগর, বয়স ৩১। আর তাঁর ৬ বছর বয়সী ছেলের নাম কোরি মিকিওলো। ঘটনাটি ২০২১ সালের বলে জানা গিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস, CourtTV.com দ্বারা প্রাপ্ত ভিডিয়োটির উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে গ্রেগর এবং তাঁর ছেলেকে ২০ মার্চ, ২০২১ সালে আটলান্টিক হাইটস ক্লাবহাউস ফিটনেস সেন্টারে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছিল। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
- ভাইরাল ভিডিয়োতে কী দেখা গিয়েছে
এ মামলায় বিচারের জন্য মঙ্গলবার বাবাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এ সময় ওশেন সিটিতে বিচার চলাকালীন, সুপিরিয়র কোর্টে অভিযুক্ত বাবার একটি ভিডিয়োও চালানো হয়েছিল। এই ঘটনার ভিডিয়ো এক্স-এ শেয়ার করেছেন আমেরিকার কলিন রাগ নামে এক ব্যক্তি। দেখা গিয়েছে, ট্রেডমিলের গতি বেড়ে যাওয়ায় ওই গতিতে ছোটার সামর্থ ছিল না শিশুটির। তার পা গতির এত বড় পরিবর্তন সহ্য করতে পারছিল না। তাই সে বার বার হোঁচট খেতে থাকে এবং ট্রেড মিল থেকে নীচে পড়ে যায়। কিন্তু তার বাবা তাকে তুলে নিয়ে আবার দৌড়োতে বাধ্য করেন। বাচ্চাটিও ট্রেডমিলে দৌড়োতে বাধ্য হয়, এবং অস্বাভাবিক রকমের ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একবার শিশুটি পড়ে গেলে, বাবা গ্রেগর তাকে আবার তুলে নিয়ে আবার ট্রেডমিলের উপর ফেলে দেন, যার ফলে শিশুটির পা পিছনের দিকে বাঁকতে থাকে। ছেলেটি তারপর আবার দৌড়োয়, কিন্তু আবার পড়ে যায় এবং মেশিনে টিকে থাকার জন্য লড়াই চালিয়ে যায়, অবশেষে বাবা ট্রেড মিলের গতি যদিও কমিয়ে দিয়েছিল।
- কিন্তু ততক্ষণে বাচ্চাটির শরীরের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
এক পর্যায়ে সে মেঝেতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। ঘটনার পরপরই শিশু কোরিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন মা। সিটি স্ক্যানের সময়, শিশুটির হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল এবং তারপরই মারা গিয়েছিল সে। বলা হয়েছে যে ট্রেডমিলে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে দৌড়োনো এবং বার বার পরে যাওয়ার ফলে শিশুটি তীব্র শোথ এবং সেপসিস সহ হৃদপিন্ড এবং লিভারে আঘাত পেয়েছিল। এছাড়া শ্বাস-প্রশ্বাসের হারও ছিল অনিয়ন্ত্রিত। পরে এ কারণেই শিশুটির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।