IPL 2024-বোলারদের বাঁঁচান, আইপিএলে ব্যাটারদের দাদাগিরি দেখে আবেদন অশ্বিনের

এবারের আইপিএলে ওভারপ্রতি গড়ে ৯.৪৯ রান করে দিয়েছেন বোলাররা।বোলারদের পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অশ্বিন। সোশ্যাল মিডিয়া 'এক্স’এ তিনি পোস্ট করেন, ‘অনুগ্রহ করে কেউ বোলারদের বাঁচান।’ এর পাশাপাশি তিনি ‘এসওএস’ শব্দটিও তিনবার লিখেছেন। এই শব্দের অর্থ—‘সেভ আওয়ার সোলস।’

রাজস্থান দলের অনুশিনে রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ছবি- পিটিআই (PTI)

শুভব্রত মুখার্জি:- চলতি আইপিএলের প্রায় প্রতিটি ম্যাচ হাই স্কোরিং থ্রিলার হয়েছে এখনও পর্যন্ত। উঠেছে প্রচুর রান। যেখানে দাঁড়িয়ে ২০০ বা ২৫০ রান করার পরেও নিরাপদ নয় কোন দল তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। এইবারের আইপিএল যতগুলো ভেন্যুতে খেলা হয়েছে প্রায় প্রতিটি ভেন্যুতেই বোলারদের জন্য উইকেটে ছিল না নূন্যতম সাহায্য। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ ইডেন গার্ডেন্সের কলকাতা বনাম পঞ্জাব ম্যাচ। যে ম্যাচে নাইটরা প্রথমে ব্যাট করে ২৬১ রান তোলে। যা তাড়া করে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পঞ্জাব! ম্যাচে সবমিলিয়ে মোট ৪২ টি ছক্কা হাঁকান দুই দলের ব্যাটাররা। দুই দল মিলিয়ে ওঠে ইডেনে নজির গড়া ৫২৩ রান! আর এইসব দেখার পরেই ভারতের চ্যাম্পিয়ন অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন বোলারদের রক্ষা করার জন্য কাতর আর্তি জানিয়েছেন। তাঁর আবেদন বোলারদের বাঁচান।

এই মুহূর্তে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগ অর্থাৎ আইপিএলে বোলারদের অবস্থা খুব খারাপ। মিচেল স্টার্কের মতন বোলারকেও চার বলে তিনটি ছয় হাঁকাচ্ছেন করন শর্মার মতন বোলার। যিনি ব্যাটার হিসেবে খুব একটা পরিচিত নন। আর এমন আবহে দাঁড়িয়ে বোলারদের জন্য খারাপ লাগছে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। বোলারের হতাশার ছবিটি ধরা পড়েছে পঞ্জাব–কলকাতা ম্যাচেও। আইপিএলকে ক্রিকেট বলে মনে হয় না বলে গত মাসেই জানিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাঁর মতে টুর্নামেন্টের ব্যাপ্তি এতটাই বড় যে মাঝেমধ্যে ক্রিকেটটাই ঢাকা পড়ে যায় !

শুক্রবার রাতে আইপিএলে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে। ইডেনে প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টি না হলেও ছক্কাবৃষ্টির সাক্ষী থেকেছেন দর্শকরা। কাল ইডেনে যা হল তা কি ক্রিকেটের আদৌও ভাল বিজ্ঞাপন? তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থাকবেই। এবারের আইপিএল আদৌও ক্রিকেটের ইতিবাচক কোনো বিজ্ঞাপন কিনা বিশেষজ্ঞদের একাংশ এমন প্রশ্নটাই করেছেন।

শুক্রবার আইপিএলে কেকেআরের করা ২৬১ রান তাড়া করে ৮ উইকেটে জিতেছে পঞ্জাব কিংস। টি-২০ ম্যাচে রান তাড়া করে জয়ের বিশ্ব রেকর্ড করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৪২টি ছক্কাও ব্যাটাররা হাঁকিয়েছেন এই ম্যাচে। দুই দলের বোলারদের ওপর দিয়েই যেন রোলার চালিয়ে দিয়েছেন ব্যাটাররা।পঞ্জাব ছয় বোলার ব্যবহার করেছে।যার মধ্যে শুধু রাহুল চাহারের ইকোনমি রেট ছিল ১০'র নিচে। অন্যদিকে কলকাতা ৭ বোলারকে ব্যবহার করেছে। যাদের মধ্যে সুনীল নারিনই ১০'র নিচে ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন। এবারের আইপিএলে প্রায় সব ম্যাচেই এক চিত্র দেখা যাচ্ছে বেধড়ক পিটুনি খাচ্ছেন বোলাররা।

এবারের আইপিএলে ওভারপ্রতি গড়ে ৯.৪৯ রান করে দিয়েছেন বোলাররা।বোলারদের পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অশ্বিন। সোশ্যাল মিডিয়া 'এক্স’এ তিনি পোস্ট করেন, ‘অনুগ্রহ করে কেউ বোলারদের বাঁচান।’ এর পাশাপাশি তিনি ‘এসওএস’ শব্দটিও তিনবার লিখেছেন। এই শব্দের অর্থ—‘সেভ আওয়ার সোলস।’ অর্থাৎ আমাদের জীবন বাঁচাও। কোন বিষয়ে কোনরকমের বিপদে কেউ পড়লে তাঁর জীবন বাঁচাতে এই সংকেত ব্যবহার করেন তিনি।

এর পাশাপাশি কলকাতা–পঞ্জাব ম্যাচ নিয়ে আরও দুটি পোস্ট করেছেন অশ্বিন। শতরানকারী জনি বেয়ারস্টো এবং ৬৮ রানে অপরাজিত থাকা শশাঙ্ক সিং দুজনে মিলে একটা সময়ে জয়ের লক্ষ্যটা ১২ বলে ৯ রানে নামিয়ে এনেছিলেন। যা দেখে অশ্বিন বিস্ময় প্রকাশ করে পোস্ট করেন, ‘একটা টি–২০ ম্যাচে ২৬০‍+ রান তাড়া করতে নেমে শেষ দুই ওভারে বল প্রতি ১ রান দরকার। হজম করতেও সময় লাগছে আমার।'এই ম্যাচ নিয়ে অশ্বিনের শেষ পোস্ট, ‘ধারাভাষ্যকার এই মাত্র বললেন ইডেন গার্ডেনের বাউন্ডারি সীমানার দৈর্ঘ্য স্বাভাবিক।’ লেখার শেষে হাসির ইমোজির ব্যবহার করেছেন তারকা স্পিনার।তিনি হয়ত বোঝাতে চেয়েছেন এই দাবি কোনোভাবেই যেন বিশ্বাসযোগ্য নয়।৩৭ বছর বয়সী অশ্বিন এবারের আইপিএলে খেলছেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে । তাঁর দল ৯ ম্যাচের ৮টিতেই জিতে রয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।