মোট জনসংখ্যার নিরিখে ৬৫ বছরে ভারতে হিন্দু কমেছে প্রায় আট শতাংশ। এমনই দাবি করা হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের একটি রিপোর্টে। 'ধর্মীয় সংখ্যালঘুর অংশীদারিত্ব- আন্তঃদেশীয় বিশ্লেষণ' (Share of Religious Minorities - A Cross-Country Analysis) নামে ওই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে যে ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যা বিচার করলে ১৯৫০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে ৭.৮২ শতাংশ। সেইসময়ের মধ্যেই মুসলিমদের জনসংখ্যা ৪৩.১৫ শতাংশ বেড়েছে। খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং শিখদের জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পার্সি এবং জৈনদের জনসংখ্যা কমেছে। আর সেই বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তিনি দাবি করেছেন যে কংগ্রেসের জন্যই দেশে হিন্দুদের অংশীদারিত্ব কমে গিয়েছে।
ভারতে হিন্দু এবং মুসলিম জনসংখ্যা
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৮৪.৬৮ শতাংশ মানুষ হিন্দু ছিলেন। যা ২০১৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮.০৬ শতাংশে। আবার ১৯৫০ সালে মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৯.৮৪ শতাংশ মুসলিম মানুষ ছিলেন। সেটা ২০১৫ সালে বেড়ে ১৪.০৯ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। অর্থাৎ ওই ৬৫ বছরে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা ৪৩ শতাংশ বেড়েছে বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
কংগ্রেসকে আক্রমণ বিজেপির
ওই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান। তিনি বলেন, '১৯৫০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার নিরিখে ভারতে হিন্দুর সংখ্যা ৭.৮ শতাংশ কমে গিয়েছে। অন্যদিকে, মুসলিমের সংখ্যা বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। দশকের পরে দশক ধরে কংগ্রেসের শাসনের ফলে এটাই হয়েছে। ওরা এলে দেশে কোনও হিন্দু থাকবে না।' বিষয়টি নিয়ে আপাতত অবশ্য কংগ্রেসের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতে অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে কী অবস্থা?
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যার নিরিখে ১৯৫০ সালে ২.২৪ শতাংশ খ্রিস্টান মানুষ ছিলেন। যা এখন ২০১৫ সালে বেড়ে ২.৩৬ শতাংশে ঠেকেছে। অর্থাৎ ৬৫ বছরে খ্রিস্টানের সংখ্যা ৫.৩৮ শতাংশ বেড়েছে। আবার মোট জনসংখ্যার নিরিখে ১৯৫০ সালে যেখানে ১.২৪ শতাংশ শিখ ছিলেন, ২০১৫ সালে সেটাই বেড়ে ১.৮৫ শতাংশে ঠেকেছে। অর্থাৎ ওই সময়ের শিখদের সংখ্যা বেড়েছে ৬.৫৮ শতাংশ।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে ১৯৫০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বৌদ্ধ মানুষের সংখ্যা বেশ বেড়েছে। মোট জনসংখ্যার নিরিখে ২০১৫ সালে যেখানে ০.০৫ শতাংশ বৌদ্ধ মানুষ ছিলেন, ২০১৫ সালে সেটা বেড়ে ০.৮১ শতাংশে ঠেকেছে। তবে কমে গিয়েছে জৈন এবং পার্সি জনসংখ্যা। ১৯৫০ সালে মোট জনসংখ্যার নিরিখে যথাক্রমে ০.৪৫ শতাংশ এবং ০.০৩ শতাংশ জৈন এবং পার্সি মানুষ ছিলেন। যা ২০১৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ০.৩৬ শতাংশ এবং ০.০০৪ শতাংশে।