পাপমোচনি একাদশী ৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে। এই উপবাস পালন করলে হত্যা, সোনা চুরি, মদ্যপান, ভোগ-বিলাস ইত্যাদি ভয়ানক পাপ বিনষ্ট হয় এবং মৃত্যুর পর ব্যক্তি স্বর্গ লাভ করে। এমনকি পাপমোচনি একাদশীর উপবাস করলে পূর্বপুরুষরা মোক্ষ লাভ করেন। জেনে নিন পাপমোচনী একাদশীর ব্রতকথা।
প্রাচীনকালে চৈত্ররথ নামে একটি বন ছিল। অপ্সরারা সেখানে নপুংসকদের নিয়ে বিচরণ করতেন। একই বনে মেধবী নামে এক ঋষিও তপস্যায় মগ্ন থাকতেন। তিনি শিবের পরম ভক্ত ছিলেন। একদিন মঞ্জুঘোষা নামে এক অপ্সরা তাকে জাদু করে তার তপস্যা ভঙ্গ করার পরিকল্পনা করলেন। কামদেবও মঞ্জুঘোষাকে তাঁর তপস্যা থেকে ঋষিকে বিরত করতে সমর্থন করেছিলেন।
ঋষিকে দেখে কামদেবের অধীনস্থ মঞ্জুঘোষা ধীরে ধীরে সুরেলা কণ্ঠে বীণার সুরে গান গাইতে লাগলেন এবং মহর্ষি মেধবীও মঞ্জুঘোষের সুরেলা গাওয়া ও তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গেলেন। মহর্ষি মেধবী শিবের তপস্যার কথা ভুলে গিয়ে কামের প্রভাবে অপ্সরার সঙ্গে জীবনযাপন শুরু করেন। তখন ঋষির দিন-রাত্রির জ্ঞান ছিল না। এভাবেই কেটে যায় প্রায় ৫৭ বছর।
এর পর একদিন মঞ্জুঘোষা ঋষিকে বললেন, হে বিপ্র! এখন দয়া করে আমাকে স্বর্গে যাওয়ার অনুমতি দিন। এখন আর বেশিদিন এখানে থাকা আমার পক্ষে উপযুক্ত নয়। তখন ঋষি সময় জানতে পারলেন। ভোগ-বিলাসে এত সময় নষ্ট করায় তিনি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন এবং অপ্সরাকে পিশাচ হওয়ার অভিশাপ দেন।
সেই অপ্সরা পিশাচ হয়ে গেল। তিনি ব্যথিত হয়ে ঋষিকে বললেন, ঋষিদের সঙ্গ ভালো ফল দেয় এবং আমি আপনার সঙ্গে বহু বছর অতিবাহিত করেছি, এখন আপনি আমাকে মুক্তির রাস্তা দেখান, নইলে লোকে বলবে যে, মঞ্জুঘোষাকে পুণ্যবান আত্মার সঙ্গে বসবাস করার কারণে পিশাচ হতে হয়েছিল। মঞ্জুঘোষার কথা শুনে ঋষি তার ক্রোধের জন্য অত্যন্ত অপরাধী বোধ করলেন এবং অপ্সরাকে চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষে পাপমোচিনী একাদশীর উপবাস করতে বলেন।
মঞ্জুঘোষাও তাই করলেন। যেহেতু তপস্বী হওয়ার পরে, ঋষি ভোগের পাপ করেছিলেন, তাই এর প্রায়শ্চিত্ত করতে তিনিও পাপমোচিনী একাদশীর উপবাস পালন করেছিলেন। এর ফলে অপ্সরা পিশাচের দেহ থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গে চলে গেলেন, অন্যদিকে ঋষির সমস্ত পাপও নষ্ট হয়ে গেল।