মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল হুগলিতে। নির্মীয়মাণ সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে কাঠের ভাড়া খুলতে গিয়ে মৃত্যু হল ২ শ্রমিকের। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির সিঙ্গুরের রতনপুরে। মৃতদের নাম হল গণেশ মান্না এবং রতন দাস। দুজনের বয়সই ৪০ বছর। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, সেপটিক ট্যাঙ্কে বিষাক্ত মিথেন গ্যাস ছিল। সেই কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। খবর পাওয়ার দমকল কর্মীরা দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যুফাঁদ, দক্ষিণ আফ্রিকায় সোনার লোভ প্রাণ কেড়ে নিল ২৪ জনের
দমকল এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রতন ধনেখালি এলাকার বাসিন্দা এবং গণেশ সিঙ্গুরের বাসিন্দা। বেশ কয়েক মাস ধরে সেপটিক ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ হচ্ছিল। শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ সিঙ্গুরের রতনপুরে ওই নির্মীয়মাণ ট্যাঙ্কে থাকা কাঠের ভাড়া খুলতে নামেন ওই শ্রমিকরা। ট্যাঙ্কটি প্রায় ৩ মাস আগে তৈরি হয়েছিল। এরপর থেকেই সেটি ঢাকনা দিয়ে বন্ধ ছিল। এদিন ঢাকনা খুলে শ্রমিকরা কাঠের ভাড়া খোলার জন্য ট্যাঙ্কে ভিতরে নেমেছিলেন। প্রথমে একজন শ্রমিক নামেন। কিন্তু, সেই শ্রমিকের কোনও সাড়াশব্দ না অনেক ডাকাডাকি করতে শুরু করেন দ্বিতীয় শ্রমিক। এর পরে সেখানে স্থানীয়দের অনেকে জমা হন। তখন দ্বিতীয় শ্রমিক নিচে নামেন। কিন্তু, তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। খবর দেওয়া হয় দমকল এবং পুলিশকে। খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা এসে পৌঁছন। সেখানে তাঁরা সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে দুজনকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
দমকলের তরফে ওসি মলয় অফিসার মজুমদার জানান, ‘দুজন শ্রমিক কাজ করতে নেমে অচৈতন্য হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা ছুটে এসে দুজনকে উদ্ধার করি।’ তিনি জানান ট্যাঙ্কটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল। সেই কারণে প্রচুর পরিমাণে মিথেন জাতীয় বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়েছিল সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে। তার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরে খবর দেওয়া হয় শ্রমিকদের পরিবার। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও ঘটেছে। মাসখানেক আগেই বহরমপুরে সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে মৃত্যু হয়েছিল এক শ্রমিকের। এছাড়াও, অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অন্য এক শ্রমিক। সেক্ষেত্রেও সেপটিক ট্যাঙ্কে বিষাক্ত গ্যাস থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে জানিয়েছিল দমকল। জানা যায়, বহরমপুরের চুয়াপুর কদমতলার কাছে নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটবাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে নামতে গিয়ে সেখানে পড়ে মারা যান শামিক শেখ (২০) নামে এক শ্রমিক। তাঁকে উদ্ধারের জন্য আর এক জন শ্রমিক সেখানে নামেন। তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন উদ্ধারকারী শ্রমিক। খবর পেয়ে দমকলবাহিনীর কর্মীরা গিয়ে দু’জনকে উদ্ধার করে।