গত একুশে জুলাই শহীদ দিবসের দিন পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল হাওড়ার মঙ্গলা হাটের আড়াই হাজারটির বেশি দোকান। সেই স্মৃতি বুকে নিয়েই ফের ব্যবসা শুরু করলেন পোড়া মঙ্গলা হাটের ব্যবসায়ীরা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দিয়েছিলেন সোমবার থেকে খুলে দেওয়া হবে মঙ্গলাহাট। সেই মতোই আজ থেকে খুলে দেওয়া হল মঙ্গল হাট। আর বাজার খুলে দিতেই পসরা সাজিয়ে বসলেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা নতুন উদ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করে দিলেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলাহাট অগ্নিকাণ্ডের পিছনে থাকতে পারে তৃণমূলের হাত, দাবি নওসাদের
দোকানগুলিতে এখনও পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে। তার মধ্যেই যে যার নির্দিষ্ট জায়গায় ত্রিপল এদিন ত্রিপল টাঙিয়ে নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছেন। যদিও এখনও ভস্মীভূত আবর্জনার স্তূপ পুরোপুরি সরানো হয়নি। ফলে সমস্ত ব্যবসায়ীরা সেখানে বসতে পারেনি। তবে ৭৫ শতাংশ ব্যবসায়ী আজ থেকে বসতে শুরু করেছেন পোড়া মঙ্গলা হাটে। এ বিষয়ে হাওড়া পুরসভা এবং পুলিশ প্রশাসন ব্যবসায়ীদের সাহায্য করেছে। তবে প্রথম দিনেই যে বিক্রিবাটা ভালো হয়েছে তা নয়, ব্যবসায়ীদের আশা ধীরে ধীরে তাঁদের ব্যবসা বাড়বে। পুজোর আগে মঙ্গলা হাট চালু হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা। তবে প্রশাসনের কাছে তাঁদের একটাই আর্জি, এই পোড়া মার্কেটে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। রূপশঙ্কর সাগর নামে এক ব্যবসায়ী জানান, ‘আমরা চাইছি এখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হোক। তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে ইলেকট্রিকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
কাজী বাসার লস্কর নামে অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, ‘প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা খুশি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আমরা এখানে দ্রুত পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে পেরেছি। আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হলো বিদ্যুৎ। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাবো যাতে এখানে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হোক।’
২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈলেশ রায় জানান, ‘ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা ভয় ছিল যে তাঁরা নিজের জায়গাতে আবার বসতে পারবেন কিনা। জায়গা দখল হয়ে যাবে কিনা। তবে আজ ব্যবসায়ীরা তাঁদের নিজেদের জায়গাতেই বসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধায়ক অরূপ রায় পরিষ্কার বার্তা দিয়েছিলেন যাঁর যেখানে ব্যবসা ছিল তিনি সেখানেই ব্যবসা করবেন। সেই মতো ব্যবসায়ীরা নিজেদের জায়গায় বসেছেন। তবে দু একটা জায়গা নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। সেটা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাইরে থেকে যাতে কেউ এসে জায়গা দখল করতে না পারে তার জন্য পুলিশ মোতায়েন ছিল।’ বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘আপাতত জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। দু তিন সপ্তাহের মধ্যে পুরসভার তরফে স্থায়ীভাবে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই বিধ্বংসী আগুনে হাওড়া মঙ্গলা হাটে আড়াই হাজারের বেশি ভস্মীভূত হয়ে যায়। তারপর থেকে রাজনৈতিক টানা পোড়েনের পর ১৭ দিন পর খুলল মঙ্গল হাট। পুজোর মুখে এই হাট চালু হওয়ায় অনেকটাই খুশি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, মঙ্গলা হাটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একজনকে আটক করল হাওড়া থানার পুলিশ। ওই ব্যক্তির নাম ধানু। তিনি ওড়িশার বাসিন্দা হলেও মঙ্গলা হাটে ব্যবসা করেন। অগ্নিকাণ্ডে অন্যান্য দোকানগুলি পুড়ে গেলেও তার দোকান অক্ষত ছিল।