স্কুলের বাচ্চাদের মিড–ডে মিলের খাবার প্রধানশিক্ষক চুরি করেন বলে অভিযোগ উঠল। এই নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার তোলপাড় পরিস্থিতি তৈরি হল। কারণ শুধু চুরি করাই নয় প্রধানশিক্ষক তার বাড়ির কুকুরকে সেই মিড–ডে মিলের খাবার খাওয়ায় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে প্রতিবাদ করেন স্কুলের খোদ সহ–শিক্ষক। আর তাই তাঁকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল প্রধানশিক্ষক ও তাঁর সহধর্মিণীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা–সহ স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা।
খোদ প্রধানশিক্ষক এই কাজ করতে পারেন তা কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু সহ–শিক্ষক নিজে চোখে এটা দেখতে পেয়েই প্রতিবাদ করেন। আর তার জন্য তাঁকে নিগৃহীত হতে হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরই এদিন এই প্রাথমিক স্কুল চত্বরে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। তবে স্কুলের প্রধানশিক্ষক সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখেই ভাষণ রেগে যান। তবে অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক এই বিষয়ে কোনভাবেই মুখ খুলতে রাজি হননি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গ্রামবাসীদের সালিশি সভায় ডাকেন। সেখানেও চলে তুমুল ঝগড়া–বিবাদ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর–২ ব্লকের এবং ভূপতিনগর থানার ইটাবেড়িয়া খালসাইড প্রাথমিক স্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে স্কুলের অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক ভূপতিচরণ মাইতি সব দোষ অস্বীকার করেন। আর তাতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। মিড–ডে মিল সরকার পাঠায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য। সেটা কিনা চুরি করে বাড়ির পোষ্যকে খাওয়ানো হয়! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। গ্রামবাসীদের কাছে প্রধানশিক্ষক প্রশ্ন তোলেন যে, সাংবাদিক এখানে এলো কেন? কে সাংবাদিকদের ডাকল? এরপরে সবাই উঠে পড়ে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাসিন্দারা। তবে অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক সালিসি সভা ছেড়ে পালিয়ে যান। তখন গ্রামবাসীরা অর্নিদিষ্টকালের জন্য প্রাথমিক স্কুল বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন।
আরও পড়ুন: ‘স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কারা বিচলিত, কারা ভয় পেয়েছে’, ইডি তলব নিয়ে সোচ্চার অভিষেক
অন্যদিকে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে তো পঠনপাঠন লাটে উঠবে। এটা বোঝানো হয় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে অভিভাবকদের। প্রধানশিক্ষককে শাস্তি দেওয়ারও ব্যবস্থা করা যাতে যায় তার জন্য স্কুল খোলা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে সহ–শিক্ষক সকলকে জানান। তাই স্কুলের সহ–শিক্ষক অনুপম জানা সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কখনওই এমন ঘটনা কাম্য নয়। আমি বহুবার প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করেছি। তবে তিনি নিজেকে শুধরে নেননি। আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’