এখন রাজ্যে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন চলছে। আজ, বুধবার দ্বিতীয় দিন। প্রথম দিনেই বিপুল বিনিয়োগের কথা জানিয়েছেন আগত শিল্পপতিরা। আর তার জেরে প্রচুর বাংলায় কর্মসংস্থান হবে বলে একটি ছবি ফুটে উঠছে। রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানি থেকে দেবী শেঠি—সকলেই বিনিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছেন। এমনকী রাশিয়া থেকে রাজ্যে বিনিয়োগ আসতে পারে বলে শোনা গিয়েছে। তবে এসব কথাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন শহিদ মিনারে অবস্থানরত ডিএ আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, রাজ্যে শিল্প এনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী এই শিল্প সম্মেলনের সমালোচনা করেছেন। এবার একইভাবে সমালোচনা করলেন ডিএ আন্দোলনকারীরা।
এদিকে আজ থেকে ৩০০ দিন আগে কেন্দ্রীয় সরকারের সমান হারে মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে এই দাবিতে শহিদ মিনারের তলায় আন্দোলন শুরু করেছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। আজ ৩০০ দিনে পা দিল তাঁদের আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্যে প্রচুর মামলা, নবান্ন অভিযান, কালীঘাট অভিযান–সহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এমনকী এখন এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সুতরাং লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এই অবস্থায় রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে মরিয়া সরকার। কারণ এখানে মেধা আছে। কারিগরি শিক্ষায় আজ সাবলম্বী যুবক–যুবতীরা। সেখানে শিল্প এলে তাঁরা চাকরি পাবেন। তাই কর্মসংস্থানে মন দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর সেটারই সমালোচনা করে বসলেন এই ডিএ আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে এই শিল্প সম্মেলনকে তাঁরা ইতিবাচক চোখে দেখছেন না। বরং না আঁচালে বিশ্বাস নেই গোছের মন্তব্য করছেন তাঁরা। ঠিক কী বলছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা? সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন চলছে। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, রাজ্যে প্রচুর বিনিয়োগ সুনিশ্চিত হয়েছে। আমরা মুখের কথা শুনতে রাজি নই। এবার শিল্প এনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন মুখ্যমন্ত্রী।’ তাঁদের দাবি, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের হাতে ডিএ দেওয়ার মতো টাকার সংস্থান আছে। অথচ সেটা মেটানো হচ্ছে না। তাতে সঙ্কটে পড়েছেন পেনশনভোগীরা। তাদের অনেকের এখন মাসিক ওষুধ কেনার পয়সা নেই। তাই বকেয়া না মেটানো পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
আরও পড়ুন: ‘যে কেউ দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারেন’, তাজপুর নিয়ে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
ডিএ আন্দোলনকারীরা এই কথা বললেও মঙ্গলবার সম্মেলনের প্রথমেই মুকেশ আম্বানি ঘোষণা করেন, বাংলা এখন অন্যতম বিনিয়োগের গন্তব্য। রিলায়েন্স ৪৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আগামী ৩ বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। আবার দেবী শেঠি এখানে মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেখানেও বড় বিনিয়োগ এবং বিপুল কর্মসংস্থানের দিশা দেখা যাচ্ছে। ডেয়ারি শিল্পে বড় বিনিয়োগ করতে চলেছে জেকে গ্রুপ। সেটাও ভরা সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন হর্ষপতি সিংঘানিয়া। এছাড়া আরও বড় বড় বিনিয়োগ আসতে চলেছে বলে খবর। সেখানে ডিএ আন্দোলনকারীদের দাবি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।