রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। আজ, রবিবার সকালে তাঁকে কমান্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে নিয়ে আসা হয়েছিল। তখন ক্ষীণ কণ্ঠে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার মরে যাব।’ সেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আজই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় মন্ত্রীকে আবার বলতে শোনা যায়, ‘আমার বাঁদিকটা পুরো গিয়েছে।’ বাকিবুর রহমান ৯ কোটি টাকা বিনা সুদে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ঋণ দেন। ব্যাঙ্কশাল কোর্টে একদিন আগেই জমা দেওয়া রিপোর্টে দাবি করেছিল ইডি। আজ সে দাবি উড়িয়ে দিলেন মন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, ‘ওসব গল্প ছেড়ে দিন’।
এদিকে ইডি’র আইনজীবী বিচারকের কাছে আবেদন করেন মন্ত্রীকে জেল হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। কিন্তু মন্ত্রীর অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে জোতিপ্রিয়র আইনজীবী জানান, তাঁর শরীর অসুস্থ। তাই চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের প্রয়োজন। তবে মন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন করা হয়নি। ব্যাঙ্কশাল কোর্ট জ্যোতিপ্রিয়কে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সেই মেয়াদ শেষের একদিন আগেই তাঁকে আদালতে তোলে ইডি। কেন একদিন আগে আদালতে হাজির করা হল তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। শুনানি শেষে চারদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।
অন্যদিকে ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী আজ সওয়াল করেন, ‘আমরা জেলে গিয়ে জেরা করতে চাই। বয়ান রেকর্ড করার জন্য ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে যেতে দেওয়া হোক।’ পাল্টা জ্যোতিপ্রিয়র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ এবং অনিন্দ্য রাউত জানান, ইডি হেফাজতে মক্কেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। একসপ্তাহ আগেও যখন এই আদালতে তোলা হয়েছিল তখনকার থেকেও অবস্থার অবনতি হয়েছে। এখন তাঁকে যে কোনও সরকারি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। তাই তাঁর শারীরিক অবস্থার সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন রইল। তখন ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী জানান, কমান্ড হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: দুই সন্তান–সহ গৃহবধূর দেহ উদ্ধার জলাশয় থেকে, কালীপুজোর দিন খুনের অভিযোগ মালদায়
আর কী জানা যাচ্ছে? রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আগে বারবার বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’ আবার আদালত যখন তাঁকে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল, তখন মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘সাতদিন পর আবার ফিরে আসছি। ১৩ তারিখ সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি একদম ক্লিয়ার কাট।’ প্রত্যেকবারই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে যে দৃপ্তের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল, আজ কিন্তু তেমনটা ছিল না। আজ বারবারই তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল, মন্ত্রী অসুস্থ।