রঞ্জিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই নিরাশ করেছে বাংলা। মূলত বাংলার বোলিং ব্যর্থতার জেরেই অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ ড্র করেছে তারা। মাত্র এক পয়েন্ট সন্তুষ্ট থাকত হয়েছে লক্ষ্মীরতন শুক্লার দলকে। সেখানে ঋদ্ধিমান সাহার ত্রিপুরা জয়ের হাত ধরেই রঞ্জি অভিযান শুরু করল। তারা নিজেদের প্রথম ম্যাচে গোয়াকে ২৩৭ রানে একেবারে উড়িয়ে দিল। নজর কাড়লেন দলের অধিনায়ক ঋদ্ধি নিজেও।
ত্রিপুরার বোলারদের দাপটে কার্যত কেঁপে গিয়েছে গোয়ার ব্যাটিং অর্ডার। যার খেসারত তাদের দিতে হয়েছে ম্যাচ হেরে। এই ম্যাচে টস জিতে গোয়া ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল ত্রিপুরাকে। আর প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই বড় রান করে ফেলে ত্রিপুরা। ২১ রানে ২ উইকেট হারালেও ম্যাচে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে ঋদ্ধির দল। তিনে নেমে শ্রীদাম পাল দুরন্ত সেঞ্চুরি হাঁকান। ১১২ রান করেন তিনি। ৯৭ রান করেন ঋদ্ধি নিজে। মাত্র ৩ রানের জন্য তিনি শতরান হাতছাড়া করেন। ৭৩ করেন গণেশ সতীশ। মণিশঙ্কর মুরাসিং করেন ৫০ রান। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় করেন ৪২ রান। যার নিট ফল, প্রথম ইনিংসে ত্রিপুরা ৪৮৪ রানের পাহাড় গড়ে। গোয়ার মোহিত রেদকার ৪ উইকেট নেন।
কিন্তু গোয়া তাদের নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৩৫ রানে গুটিয়ে যায়। সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন দীপরাজ গাঁওকর। বাকিদের হাল ছিল তথৈবচ। কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। ত্রিপুরার অভিজিৎ সরকার ৪ উইকেট তুলে নেন। ৩টি করে উইকেট নেন রানা দত্ত এবং মণিশঙ্কর। ত্রিপুরা প্রথম ইনিংসে ৩৪৯ রানের বিশাল লিড পায়। দ্বিতীয় ইনিংসে তাই তারা ৫ উইকেটে ১৫১ রান করে ডিক্লেয়ার করে দেয়। জয়ের জন্য গোয়ার সামনে ৫০১ রানের লক্ষ্য দেয় ত্রিপুরা।
সেই রান তাড়া করতে নেমে কৃষ্ণমূর্তি সিদ্ধার্থ অপরাজিত ১৫১ রান করলেও, শেষ রক্ষা হয়নি। কারণ বাকিরা কেউ উইকেটে দাঁড়াতেই পারেনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছেন লক্ষ্য গর্গ। মাত্র ২৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় গোয়া। ত্রিপুরার হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মণিশঙ্কর এবং রানা।
আরও পড়ুন: দুই ইনিংস মিলিয়েও মুম্বইয়ের রান ছুঁতে পারল না বিহার, ঘরের মাঠে পুদুচেরির কাছে লজ্জার হার দিল্লির
এদিকে চেতেশ্বর পূজারা দ্বিশতরান হাঁকালেও, জিততে পারল না সৌরাষ্ট্র। ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল তাদের। তবে পূজারারা জন্যই প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে ৩ পয়েন্ট পেল সৌরাষ্ট্র। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায় ঝাড়খণ্ড। সৌরাষ্ট্রের চিরাগ জানি একাই ৫ উইকেট তুলে নেন। জয়দেব উনাদকাট এবং আদিত্য জাদেজা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সৌরষ্ট্র ৪ উইকেটে ৫৭৮ রানের পাহাড় গড়ে ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেয়। তার মধ্যে চেতেশ্বর পূজারা একাই দ্বিশতরান হাঁকিয়েছেন। ৩০টি চারের হাত ধরে ২৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়াও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন প্রেরক মানকড়। তিনি অপরাজিত ১০৪ রান করেছেন। ৮৫ রান করেছেন হার্ভিক দেশাই। অর্পিত ভাসাভাদা ৬৮ এবং শেলডন জ্যাকসন ৫৪ করেছেন।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে কুমার সুরজ এবং বিরাট সিং-দের দাপটে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন মাঠে মারা গেল সৌরাষ্ট্রের। ঝাড়খণ্ডের একমাত্র আদিত্য সিং ছাড়া বাকিরা মাটি কামড়ে লড়াই করে, ম্যাচটিকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যান। ওপেন করতে নেমে কুমার দেবব্রত ৯১ রান করেন। আর এক ওপেনার নাজিম সিদ্দিকি ৪৫ করেন। আদিত্য ১১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। বিরাট করেন অপরাজিত ৫১ রান। ৩ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৬ রান করে ঝাড়খণ্ড। ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়। তবে পূজারা যে পারফরম্যান্স করেছে, তাতে তিনি ফের জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছেন। আদৌ কি সেই দরজা তাঁর জন্য খুলবে?