তৃণমূলের অন্দরে নবীন ও প্রবীণের দ্বন্দ্বকে ঘিরে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছিল। এমনকী নির্দিষ্ট বয়সের পরে অবসর নেওয়া দরকার বলেও সওয়াল করছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এনিয়ে বিতর্ক কিছু কম হয়নি। তবে এবার লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরে দেখা গেল সেখানেও সৌগত রায়ের মতো প্রবীণও রয়েছেন আবার দেবাংশু ভট্টাচার্যের মতো নবীনরাও রয়েছেন। মানে ৭৬ও আছেন আবার ২৮ও আছেন।
এক অদ্ভূত ভারসাম্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার প্রবীণ নেতাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদেরকে একেবারে বাতিল করা হোক এটা তিনি চাননি। তবে এবার দেখা গেল সেই প্রার্থী তালিকায় সৌগত রায়ের মতো প্রবীণ সাংসদও রয়েছেন।
আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় একাধিকবার প্রবীণদের ভোটের রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথা বলতেন। সেই জায়গায় নবীনদের জায়গা দেওয়ার কথা বলতেন। সেক্ষেত্রে নবীন প্রজন্মের কয়েকজন এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায়।
সৌগত রায় সংবাদমাধ্য়মে বলেন, তিনবার জিতেছি। দল আবার মনোনয়ন দিয়েছেন। দলের কাছে কৃতজ্ঞ। কর্মীরা সকলেই আছেন।
৭৫ বছর বয়সি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, ৭৬ বছর বয়সি সৌগত রায় সহ একাধিক নেতাকে ফের আনা হয়েছে প্রার্থী তালিকায়। যে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খুলেছিলেন কুণাল ঘোষ সেই সুদীপকে ফের প্রার্থী করা হল। উত্তর কলকাতায় প্রার্থী করা হল তাঁকে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায় সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, আমি কলকাতা শহরে ৯ বার জিতেছি। চারবার বিধায়ক। পাঁচ বার সাংসদ। নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রার্থী হয়েছি। লড়ব।
এদিকে সম্প্রতি এই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধেই তোপ দেগে দল ছেড়েছিলেন তাপস রায়। দলের অন্দরে বেশ স্বচ্ছ ইমেজ ছিল তাঁর। কিন্তু সেই তাপস রায়কেও ধরে রাখতে পারেননি তৃণমূল। সেক্ষেত্রে এবার উত্তর কলকাতা আসনের প্রতি বাড়তি নজর রয়েছে বাংলার।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হল সৌগত রায়কে। আবার একেবারে আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্যকেও এবার প্রার্থী করা হল। বয়স মাত্র। ৩০ বছরও হয়নি। তাকেই এবার তৃণমূলের প্রার্থী করা হল তমলুক আসন থেকে।
নবীন আর প্রবীণের মধ্য়ে মেলবন্ধন করানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবারের প্রার্থী তালিকায়। শেষ পর্যন্ত এই ম্যাজিক, এই ভারসাম্য কতটা কাজে দেয় সেটাই দেখার।