একদিকে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। আর অন্যদিকে তাঁরই প্রাক্তন স্বামী সৌমিত্র খাঁ। লড়াই জমজমাট বিষ্ণুপুরে। তবে প্রচারে বেরিয়ে বার বারই বিতর্কে জড়াচ্ছেন সুজাতা। তবে প্রচারকে একেবারে রঙিন করে তুলেছেন তিনি। কখনও তিনি সরাসরি আদিবাসীদের সঙ্গে নাচতে শুরু করে দিচ্ছেন। তবে এবার ওন্দাতে একেবারে হাত তুলে খোল বাজিয়ে হরিনামের দলের সঙ্গে নেচে উঠলেন তিনি। এমনকী মাইক নিয়ে তিনি ভক্তদের মাঝে দু কথা বলেন। আর সেখানেই তিনি নিজেকে রাধার সঙ্গে তুলনা করেছেন বলে খবর।
সুজাতার এই বক্তব্য শুনে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ভক্তদের মধ্য়ে। সূত্রের খবর, তিনি ওই কীর্তনের আসরে গিয়ে বলেন, কীর্তনের তালে তালে আমি নাচতে শুরু করলাম। মনে হচ্ছিল বৃন্দাবনে রাধিকাও বোধহয় একই রকমভাবে নাচতেন। আমারও আজ মনে হল আমিও আমার কৃষ্ণের সঙ্গে রাধিকা হয়ে গিয়েছি। আমার কৃষ্ণ আপনারা সকলে, আপনাদের ভালোবাসা…আমি কোনওদিন খোল বাজাইনি। এত সুন্দর খোল বাজাতে পারব ভাবতেই পারিনি। মনে হয় সবটাই প্রভূর কৃপা। সবই প্রভূর লীলা।
বাস্তবিকই রাজনৈতিক ময়দান থেকে তিনি এসেছিলেন আধ্যাত্মিক আসরে। সেখানেই খোল হাতে নাচতে শুরু করেন তিনি। সেখানে নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশও করেন তিনি।
এখানেই থেমে থাকেননি সুজাতা। তিনি বলেন, রাধিকা যেমন গোটা জীবনটা কৃষ্ণের চরণে উৎসর্গ করেছিলেন, তেমনই আমি গোটা জীবনটা বিষ্ণুপুরের মানুষের চরণে উৎসর্গ করে দিয়েছি। রাধা মানে ত্যাগ। আমি বিশ্বাস করি বিষ্ণুুপুরের মানুষের জন্য মন কাঁদবে।
আর ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমর নাথ শাখা বলেন, আজ নিজেকে রাধা ভাবছেন, কাল হেমা মালিনী ভাববেন। পাগলামি করছেন…
কিছুদিন আগে সুজাতাকে দেখা গিয়েছিল একেবারে অন্য মুডে। তিনি গিয়েছিলেন বেলিয়াতোড়ের বেনাচাপড়া গ্রামে। বেশিরভাগই আদিবাসীদের বাস সেই গ্রামে। সেখানেই যান তিনি। ভোটপ্রচারের সঙ্গেই সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের খবর নেন তিনি। একেবারে ঘরের মেয়ের মতো তিনি মিশে যান তাঁদের সঙ্গে। ধামসা মাদলের তালে নেচেও ওঠেন তিনি। এক আদিবাসী পরিবারের বাড়ির উঠোনে বসে মুড়িও খান তিনি। একেবারে গল্পে মেতে ওঠেন তিনি। কার্যত ঘরের মেয়ে এই ইমেজটাকে সামনে এনে ভোট প্রচারে নেমেছেন তিনি। সুজাতা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যিনি রয়েছেন তার সঙ্গে সাধারণ মানুষ কোথায়। এত নিরাপত্তারক্ষী। মানুষ তো ভয় পেয়ে যাচ্ছেন।
সুজাতা মণ্ডল আগে ছিলেন সুজাতা খাঁ। সৌমিত্রর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। গত বিধানসভাতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল সৌমিত্রর পাশে। প্রখর রোদকে উপেক্ষা করে তিনি তৎকালীন স্বামীর জন্য একাই প্রচার করেছিলেন। আর এবার সেই সৌমিত্রই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী।