ইডি–সিবিআই বিজেপির একমাত্র অস্ত্র। তাই দিয়ে বিরোধীদের উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে পারবে না বুঝতে পেরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এই অভিযোগ বারবার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস–সহ দেশের তামাম বিরোধী দলগুলি। এবার তার সপক্ষে প্রমাণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। এই কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যানকে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়েছেন বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। তাই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দিয়ে নালিশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জি পর্যন্ত জানানো হয়েছে। এই নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
এদিকে গঙ্গারামপুরে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সেখানে প্রচার সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্রকে উদ্দেশ্য করে বিজেপি প্রার্থী মন্তব্য করেছিলেন, ‘কঠোর হতে বাধ্য করবেন না। না হলে চেয়ারম্যান যতদিন ছিলেন না, তার থেকে বেশিদিন ইডি–সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকতে হবে।’ সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যার তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রেক্ষিতেই চিঠি দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। বালুরঘাটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে। এই বিপ্লব মিত্রের ভাই হলেন প্রশান্ত মিত্র। যাঁকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বসলেন সুকান্ত মজুমদার।
অন্যদিকে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মহুয়া মৈত্র বিজেপির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহারের অভিযোগ আগে করেছিলেন নির্বাচন কমিশনে। পরবর্তী সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। এবার বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে গেলেন তাঁরা। সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষ্ণনগরের সভা থেকে বলেছেন, এখন ইডি–সিবিআই ডাকলে যাবেন না। বলবেন, নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: ‘অমিত শাহ একজন গুণ্ডা দাঙ্গাবাজ’, কর্নাটক মুখ্যমন্ত্রীর ছেলের আক্রমণে তোলপাড়
এছাড়া দু’দিন আগে গঙ্গারামপুরে নির্বাচনী প্রচারে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। নির্বাচনী প্রচার সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘হুমকি, ধমকি দিচ্ছেন। বলছেন এই ওয়ার্ড থেকে লিড দিতে না পারলে আগুন ধরিয়ে দেবেন। ওগুলি বাংলা সিনেমার ডায়লগ। আমাকে কঠোর হতে বাধ্য করবেন না। গঙ্গারামপুরে একজন ভাইবোনের গায়ে হাত পড়লে যে কদিন চেয়ারম্যান থাকবেন, তার থেকে বেশিদিন ইডি–সিবিআইয়ের হাতে থাকবেন।’ এই হুমকির বিরোধিতায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলেই অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে।