আমাদের দেশের জনপ্রিয় গায়িকাদের মধ্যে লতা মঙ্গেশকর অন্যতম। শুধু জনপ্রিয় বললে ভুল হয়, তিনি দেশের রত্ন। ভারত রত্ন থেকে শুরু করে পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে সম্মান, সবই রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। দেশের মানুষের কাছে বিশেষ করে সংগীত-প্রেমীদের কাছে তিনি ভগবানের থেকে কিছু কম নন। লতার এক পাগল-ভক্ত রয়েছে, যার নাম রাজীব দেশমুখ। গায়িকার যে কোনও কনসার্টেই দেখা যেত রাজীবকে। আর তারপর তো নিজের বাড়িতেই লতার নামে মন্দির স্থাপন করেন এই ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, লতাকে দেবী-রূপে পুজোও করেন।
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন সতা মঙ্গেশকর। বয়সজনিত কারণে নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। আর তার ফলেই মৃত্যু। আর লতার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে মন্দিরটি তৈরি করেছেন রাজীব দেশমুখ। মন্দিরের ভিতরে লতা মঙ্গেশকরের একটি মূর্তি রয়েছে। রাজীব এবং তার পরিবার প্রতিদিন প্রতিমার পূজা করেন। গলায় মালা দেওয়া হয় লতার। রাজীব নিজের কণ্ঠে রেকর্ড করা একচি গানও বাজায় আরতির সময়তে।
লতা মঙ্গেশকরের সবচেয়ে বড় ভক্তদের মধ্যে একজন হলেন রাজীব। এক সাক্ষাৎকারে, রাজীবকে প্রয়াত গায়িকার প্রতি নিজের ভালোবাসা জাহির করতে দেখা গিয়েছিল। আরও পড়ুন: গদর ২ বা কেরালা স্টোরি নয়! অস্কারে যাচ্ছে মালয়ালাম ছবি ‘২০১৮-এভরিওয়ান ইজ আ হিরো’
তিনি প্রকাশ করেছিলেন যে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখা করতে মুম্বই আসবেন বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। রাস্তায় পুলিশ তাঁকে একা দেখার পর বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ১৯৮২ সালে রাজীব যখন লতার সঙ্গে দেখা করতে আসেন তখন তিনি একটি অনুষ্ঠানের জন্য বিদেশে। অবশেষে ১৯৮৭ সালে রাজীব সুযোগ পান লতাকে কাছ থেকে দেখার। তিনি এই সাক্ষাৎকারেই জানান, সেই দিনই তিনি অনুভব করেছিলেন যে তাঁর স্বপ্নপূরণ হয়েছে।
রাজীবের স্ত্রী শুভাঙ্গীও জানান যে, লতা মঙ্গেশকর তাদের কাছে দেবীর মতো ছিলেন এবং সারাজীবন থাকবেন। এবং তাঁর প্রতি তাদের অনেক শ্রদ্ধা রয়েছে। সবাই যাতে দেখতে পায় সেজন্য তারা মূল হলে লতার ছবিটি রেখেছেন।
বেঁচে থাকলে আজ ৯৪ বছরে পা দিতেন সুর সম্রাজ্ঞী। ৩৬ টি ভাষায় ৩০ হাজারের বেশি গান রেকর্ড করেছিলেন 'নাইটেঙ্গল অফ ইন্ডিয়া'। লতা চলে গেলেও তাঁর সুরেলা গলা এখনও ঘরে ঘরে মানুষের মন ওকানকে দেয় আরাম। জন্মবার্ষিকীতে অনেক শুভেচ্ছা তাঁকে।