মা-বাবার স্বপ্নপূরণ করার শখ থাকে বহু সন্তানেরই। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিস্থিতি। কখনও অর্থনৈতিক কারণে, তো কখনও শারীরিক সমস্যার কারণে তা আর হয়ে ওঠে না। কিছু সন্তানের মনে সারাজীবন থেকে যায় মা-বাবার স্বপ্নপূরণ করতে না পারার হতাশা। তবে বলিউডের বিখ্যাত সুরকার ও মিউজিসিয়ান প্রীতম বোঝালেন, ইচ্ছে থাকলেই উপায় বের করা সম্ভব। মা-কে লন্ডন ও প্যারিস দেখাতে করলেন অসাধ্য সাধন।
২০২৩-এর শেষের পথে প্রীতম জানালেন ভালো সংগীতের পাশাপাশি, পরিবারের সঙ্গে কিছু দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন তিনি। আর সেটাই ভাগ করে নিতে চান সকলের সঙ্গে।
মা অনুরাধা চক্রবর্তীর ইংল্যান্ড ও প্যারিস ট্যুরের কিছু ছবি দিয়ে ভিডিয়ো বানালেন তিনি। সঙ্গে ছিল পুরো পরিবার। সঙ্গে দিলেন মন ছুঁয়ে যাওয়া দীর্ঘ বার্তা।
প্রীতম লিখলেন, ‘কয়েক বছর আগে, মা তাঁর জীবনে অন্তত একবার লন্ডন এবং প্যারিস দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু বাবার অ্যালজাইমার্স ধরা পড়ে। আর এই গোটা সময়টা বাবার পাশে ছিলেন মা, তাঁর যত্ন নিচ্ছিলেন। এমনকী সেই সময়ে তাঁর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হাঁটুর অস্ত্রোপচার করাতেও রাজি হননি।’
‘এরপর বাবা চলে যান আমাদের ছেড়ে। তারপর করোনা আসে। জীবন আরও স্থবির হয়ে পড়েছিল। বয়সের জন্য মায়ের আর হাঁটুর অস্ত্রোপচার করাও সম্ভব ছিল না। হুইলচেয়ারেই আটকে পড়েছিল। কিন্তু তাও আমরা তাঁকে নিয়ে ছুটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি’, আরও লেখেন প্রীতম।
প্রীতম জানান, তাঁরা খুব চিন্তায় ছিলেন মা অনুরাধার স্বাস্থ্য নিয়ে। কিন্তু মাযের মুখের আনন্দ দেখে মন ভরেছিল আনন্দে। প্রীতম লিখেছেন, ‘মা খুব উত্তেজিত ছিল, কিন্তু যদিও আমি তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে কিছুটা ভয়ে এবং চিন্তায় ছিলাম। তবে তাঁর চোখেমুখে যে আনন্দ ছিল, তা অমূল্য। ভালো ব্যাপার হল, বাচ্চারা তাদের ঠাম্মুকে ঘোরানোর সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিল নিজেদের কাঁধে। এটি এমন একটি ছুটি, যা সারাজীবন আমার মনে থেকে যাবে।’
‘আমি শুধু আপনাদের সকলের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই যে দয়া করে এখনই আপনার পিতামাতার ইচ্ছা পূরণ করুন। যতক্ষণ তাঁরা আপনাদের সঙ্গে আছেন। ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করবেন না। বরং এই মুহূর্তে নিজেদের উপভোগ করুন।’
প্রীতমের এই পোস্ট মন ছুঁয়ে গিয়েছে নেটিজেনদের। একজন কমেন্টে লিখলেন, ‘সব মা যেন আপনার মতো সন্তান পায়। এত মিষ্টি নাতি-নাতনি পায়। সুন্দর পোস্ট’। আরেকজন লিখলেন, ‘সমাজের অনেক কিছু শেখার আছে এৎকম পোস্ট থেকে। বাবা-মার বৃদ্ধ বয়সের লাঠি সন্তানই। তাঁদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবেন না কেউ দয়া করে।’