করোনা আবহের মধ্যে বিহার নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে পেরে আত্মবিশ্বাসী জাতীয় নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে তিনি হবেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। ২০২১ সালে কিভাবে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন করবেন তা হিন্দুস্থান টাইমসের সাংবাদিক দীক্ষা ভরদ্বাজকে সাক্ষাৎকারে জানালেন নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র।
প্রশ্ন ১) করোনা আবহে বিহার ভোট কেমন গেল?
উত্তর) আমরা সামাজিক দূরত্ব এবং স্যানিটাইজেশনের উপর বেশি করে জোর দিয়েছিলাম। আর বিশ্বজুড়ে যে গাইডলাইন রয়েছে তা মেনে চলা হয়েছিল। এটাই আমাদের সাহায্য করেছিল ভোটারদের করোনা থেকে রক্ষা করতে।তৃতীয় দফার নির্বাচনে ৫৭.৯২ শতাংশ ভোট পড়েছে। যা ২০১৫ সালের থেকে বেশি। ২০১৫ সালে ৫৬.৬৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সুতরাং ভোটারদের অংশগ্রহণ বেশি ছিল।
প্রশ্ন ২) এই নির্বাচনে কী কোনও চ্যালেঞ্জের মুখ পড়তে হয়েছিল?
উত্তর) সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভোট করানো। স্যানিটাইজেশনও করতে হচ্ছিল কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর। ভোটারদের নিরাপদ রাখাটা বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁদের সচেতন করার কাজটাও করেছে নির্বাচন কমিশন। যেখানে ভাবা হয়েছিল নির্বাচনের পর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে, সেখানে কোনও প্রভাব পড়েনি।
প্রশ্ন ৩) নির্বাচন আর মহামারির মধ্যে কিভাবে পার্থক্য রাখলেন?
উত্তর) বিহার নির্বাচনে প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল প্রতিটি বুথে। একটাও বুথ জ্যাম বা ক্যাপচারিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। এই নির্বাচনের আগে ৬৬.৪১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। অ্যালকোহল, নারকোটিক্স–সহ নানা জিনিস উদ্ধার করা হয়। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে এবার বেশি এইসব উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৪) বিহার নির্বাচন থেকে কি বিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন?
উত্তর) সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, কোভিড ভ্যাকসিন যদি দ্রুত না বেরয় তাহলেও ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন হবে। বিহারের মতো করেই অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচন হবে। যেমন—পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অসম, পুদুচেরি এবং কেরল। বিহারে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদভাবে ভোট হয়েছে।
প্রশ্ন ৫) কোভিড পজিটিভ মানুষ, কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষ এবং উচ্চ–তাপমাত্রার মানুষদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন কিভাবে ভোট করল?
উত্তর) এবার ২৪০ জনের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভোট নেওয়া হয়েছে। তাঁরা সশরীরে এসেই ভোট দিয়েছেন। তার জন্য আলাদা এক ঘন্টা রাখা হয়েছিল। যাকে বলা হয় কোভিড আওয়ার। আধিকারিকরা পিপিই কিট পরে এই ভোট নেয়।
প্রশ্ন ৬) এই নির্বাচনে কি সবাই অংশগ্রহণ করতে পেরেছিল?
উত্তর) হ্যাঁ, নির্বাচন কমিশন সেই ব্যবস্থা করতে পেরেছিল। প্রতিটি বিধানসভায় দুটি করে ভোটকেন্দ্র রাখা হয়েছিল। যা মহিলা পরিচালিত। কোভিড রোগী, প্রবীণ নাগরিক এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য পৃথক পৃথক বুথ রাখা হয়েছিল। এছাড়া কমিশন আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের মাধ্যমে ৩০–৪০টি দেশ থেকে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।