রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিতর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সম্প্রতি বাইডেন মন্তব্য করেছেন, ‘আমি মনে করি না এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য প্রস্তুত।’ যদিও, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন যে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার যোগ্য। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলি পরিদর্শন করছেন জেলেনেস্কি। ‘নিঃসন্দেহে, ইউক্রেন ন্যাটোতে থাকার যোগ্য’ এমনই মন্তব্য এরদোগান। গত বছরের ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর কিয়েভের পাশে দাঁড়ায় ন্যাটো সামরিক গোষ্ঠী। সেই থেকে আজও সামরিক ও মানবিক সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। সূত্রের খবর, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলি ইউক্রেনকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র পাঠিয়েছে।
অন্যদিকে ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে নেতিবাচক উত্তর দিয়েছেন বাইডেন। এই বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনও বিশেষ ব্যবস্থা করতে পারবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। অগস্টে লিথুনিয়াতে বৈঠকে বসবে ন্যাটো। তার কয়েকদিন এমন মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই প্রসঙ্গে ন্যাটোর সামরিক জোটের প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, জোটের নেতারা লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ন্যাটো-ইউক্রেন কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশন করবেন।
স্টলটেনবার্গ আরও বলেন, ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেনের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। তবে কিয়েভের সদস্যপদ নিয়ে কোনো কথা হবে না। তিনি বলেন, ভিলনিয়াসের সামিটে কিয়েভকে ন্যাটোতে যোগদানের জন্য কোনো আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তবে ইউক্রেনকে ন্যাটোর কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে। আমার বিশ্বাস আমরা একটি ভালো সমাধান খুঁজে বের করবো।
জো বাইডেন ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘এটি আমার পক্ষে খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। আমি আমাদের মিত্রশক্তিদের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করেছি।’ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাইডেন। জেলেনস্কি, বাইডেন এবং বিশেষত এরদোগানের মন্তব্যকে ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছেন। এদিকে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন, ইউক্রেন যদি শেষপর্যন্ত ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার জন্য রাজি থাকে, তাহলে তাদের জন্য কিছু শর্ত শিথিল করা সম্ভব।
ন্যাটো সামরিক জোটে আপাতত ইউক্রেনকে রাখার ক্ষেত্রে অনীহা দেখালেও আমেরিকা যাবতীয় সহযোগিতা করছে জেলেনস্কি প্রশাসনকে। শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করেছে যে তারা ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা পাঠাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একে 'খুব কঠিন সিদ্ধান্ত' বলে অভিহিত করেছেন। তবে প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটেন, কানাডা এবং স্পেন বলেছে যে তারা এ অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধী। ১০০টিরও বেশি দেশ ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ করেছে, কারণ তা বেসামরিক মানুষের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনে। ফলে আগামীতে ইউক্রেন সংকট আরও গভীরতর হতে চলেছে বলেই বিশেষজ্ঞদের মতামত।