ঘরের মাঠে একেবারে পাঁচ গোল। আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ৫-০ জয়। এর আগেও আইএসএলে ৫ গোল করেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সেবার ওড়িশার কাছে ৫-৬ হেরেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। কার্লেস কুয়াদ্রাতের কোচিংয়ে আইএসএলে সবচেয়ে বড় জয় এল লাল হলুদে প্রতিযোগিতার বৃহত্তম জয়ের তালিকায় যুগ্ম ভাবে তৃতীয় স্থানে থাকবে।
সোমবার যুবভারতীতে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেয় লাল-হলুদ। জোড়া গোল ক্লেটন সিলভা এবং নন্দকুমারের। বাকি গোলটি করেন বোরহা হেরেরা। হায়দরাবাদের পর এটি এবারের আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় জয়। এখনও পর্যন্ত মরশুমের সেরা ফুটবল কুয়াদ্রাতের দলের। দু'মাস পরে আইএসএলে কোনও ম্যাচ জিতল ক্লেটনরা। তাও আবার পাঁচ গোলে।
স্বাভাবিক ভাবেই দলের খেলায় উচ্ছ্বসিত লাল-হলুদ কোচ। তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমরা জয় পেলাম, ভাগ্য সুপ্রসন্ন হল। আমরা চেষ্টা করে গিয়েছি। যে সুযোগগুলো আজ আমরা পেয়েছি, তা থেকে গোল করেছি। অনেক জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। কারণ, দল ঘন ঘন আক্রমণে উঠছিল। ওরা পেনাল্টিও মিস করেছে। আমরা সৌভাগ্যবান যে ক্লিন শিট বজায় রাখতে পেরেছি। ফুটবল এ রকমই। আজ আমাদের সব কিছুই ঠিকঠাক হয়েছে। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধেই আমরা ২-০ জিততে পারতাম। কিন্তু আজ আমরা জায়গা তৈরি করে তা সফল ভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি, পাসিং খুব ভালো হয়েছে। ফলে পুরো পয়েন্ট পেয়েছি। গত কয়েক মাস ধরে আমরা অনুশীলনে যে ফিনিশিংয়ের প্র্যাকটিস করে আসছি, এত দিনে তা কাজে এল।’
আগের ম্যাচে চোটের জন্য খেলতে পারেননি বোরহা। এই ম্যাচে তিনি একাদশে ফেরেন। আর বোরহা দলে ফেরায়, খেলার কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন আনেন বলে স্বীকার করে নেন কুয়াদ্রাত। লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ দাবি করেন, ‘কৌশলে পরিবর্তন আসেই এবং তা নির্ভর করে কোন কোন খেলোয়াড় হাতে রয়েছে, তার উপর। যেমন বোরহা গত ম্যাচে ছিল না, এই ম্যাচে ওকে পেয়েছি। তাই দুই ম্যাচে ভিন্ন কৌশল ছিল। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে আমরা তিন জন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার খেলাই। কারণ, ওই ম্যাচে আমরা গোল খেতে চাইনি, রক্ষণকে আরও আঁটোসাঁটো করার প্রয়োজন ছিল। তবে আমাদের এই ম্যাচে কৌশল ছিল অন্য রকম। গত চার মাসে আমাদের ছেলেরা বিভিন্ন রকম কৌশল নিয়ে খেলেছে অনুশীলনে। তাই ওরা জানে কোন সিস্টেমে কী ভাবে খেলতে হবে এবং কোন পরিস্থিতিতে কোন কৌশল কার্যকর হয়।’
বেঙ্গালুরু এফসি-কে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করা কোচ মনে করেন, ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে এ বার ইস্টবেঙ্গল ভালো কিছু করবেই। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এখনও সামনে দীর্ঘ লিগ, অনেক ম্যাচ। আমাদের পরিশ্রম করে যেতে হবে। সবাই মিলে চেষ্টা করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরা ভালো খেলতে শুরু করেছি। এই ফর্ম যদি ধরে রাখতে পারি, তা হলে আর সেরা ছয়ের বাইরে আমাদের বেশি দিন দেখতে হবে না। পরের ম্যাচেও (পাঞ্জাব এফসি) আমরা এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করব। তবে ফোকাস বজায় রাখতে হবে।’
কোচ মনে করেন, তাঁর দল সঠিক পথেই এগোচ্ছে। তিনি বলেও দেন, ‘আমাদের ছেলেদের আগেই বলেছি যে, প্রতি ম্যাচেই আমাদের তীব্রতার সঙ্গে খেলতে হবে। আমরা জিতি বা হারি, সমর্থকেরা যেন আমাদের জন্য গর্ববোধ করেন। গত কয়েক ম্যাচ আগেও আমাদের যে সব জায়গায় খামতি ছিল, সেগুলো এদিন পাওয়া যায়নি। ফলে বলাই যায় যে, আমরা ঠিক দিকে এগোচ্ছি।’
বিরতির আগে ২-০ এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিন গোল হয়। বিরতিতে খেলোয়াড়দের কী বলেছিলেন, তা জানতে চাইলে কুয়াদ্রাত বলেন, ‘আমি ছেলেদের ফোকাস বজায় রাখতে বলেছিলাম। আমরা তখন কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে সুযোগ তৈরি করছিলাম। আমাদের ছেলেদের বলেছি, ফুটবলকে আগে উপভোগ করতে শেখো। তার পরে হার-জিতের কথা ভাববে। আমাদের দলের খেলোয়াড়দের ফুটবল উপভোগ করতে হবে। এটা খুবই জরুরি।’ বোরহা হেরেরার চোট নিয়ে কোচ জানিয়ে দেন, ‘বোরহার মাথার পিছনে কয়েকটা সেলাই পড়েছে। ওর চোটটা গুরুতর নয়।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।