যত সময় গড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে দ্বিতীয় টেস্ট আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। দুই পক্ষই এই ম্যাচ জিততে মরিয়া। কোনও সুযোগ ও পদ্ধতি ব্যবহার করতে ছাড়ছে না তারা। যার ফলে ইংল্যান্ডের লর্ডসে দুই দলের তরফ থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা বাউন্সার দিয়ে বোলিং করতে দেখা গেল। আর এই নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল, তাহলে কি ফের বোলিং বাউন্সারের নিয়ম পরিবর্তন করা উচিত? ১৯৩৩ সালে প্রথমবার বাউন্সারের জন্য আইন সংশোধন করা হয়। আম্পায়ারদের ক্রমাগত বাউন্সার বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হয়। তারপর ১৯৯৪ সালে ওভার প্রতি বাউন্সারের সংখ্যা কমিয়ে এনে দুইটি করা হয়।
শনিবার দুপুরে লন্ডনে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার ক্রমাগত বাউন্সর বোলিং করতে শুরু করে। তখন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মার্ক টেলর ভাবতে থাকেন আম্পায়াররা এই বোলিংয়ের জন্য নোবেল দেওয়া শুরু করবে কিনা। তিনি বাউন্সার বোলিংয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'যদি একজন ব্যাটার যদি শট না খেলে, তাহলে ওভারে কতগুলি বাউন্স বল করা যেতে পারে। যদি দুই দলই এই পন্থা ব্যবহার করে খেলতে থাকে তাহলে এখনও তো অনেক ম্যাচ আছে, বাকি সিরিজে কি হবে। বাউন্সারের নিয়ম দুইবার পরিবর্তন করা হয়েছে তবে বোলিং করার বৈধতা এখনও রয়েছে। আম্পায়াররা যদি মনে করেন তাহলে নো বল ডাকতে পারেন। এটা শুধুমাত্র ইংল্যান্ডের জন্য নয় অস্ট্রেলিয়া বল করলেও তাই হবে। ক্রমাগত বাউন্সার বোলিং আম্পায়ারদের ওপর অনেকটা চাপের সৃষ্টি করে।'
প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রস জানান এই পদ্ধতিটি 'আইনি' এবং 'কার্যকর' করতে হবে। তিনি বলেন, 'আমি এটা দেখতে পছন্দ করি না। আমি এটা কিছুটা ক্লান্তিকর বলে মনে করি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে এটি কার্যকর নয়। পদ্ধতির কিছু ভুল নেই। খেলায় যেকোনও কিছু কাজ করে। এটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত।'
তবে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে , ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলের প্রাক্তন প্রধান ফাস্ট বোলার এবং ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম দ্রুততম বোলার মাইকেল হোল্ডিং এই বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'আমি এই পরিস্থিতির কয়েকটি দিক দেখতে পাচ্ছি। এইরকম বোলিং যেমন কাজ করে তেমন বিরক্তকরও হতে পারে। মূলত ওরা ম্যাচ জেতার রাস্তা খুঁজছে। এটা আইনত বৈধ। তবে যাইহোক ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেরিয়ারে কোনও পর্যায়েই আমরা এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা বাউন্সার বোলিং করিনি। এই লর্ডস টেস্টের এক পর্যায়ে ৯৮% বোলিং ছিল শর্ট-পিচ। আমরা তা কখনও করিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন চারজন ফাস্ট বোলার নিয়ে বোলিং করছিল এবং ব্যাটারদের বাউন্স দিয়ে আউট করছিল তখন ক্রিকেট বিশ্ব উত্তাল হয়েছে। তবে এখন কী মনে হয় এই বাউন্সার বোলিং নিয়ে কোন গন্ডগোল হবে? আমার মনে সন্দেহ আছে। এখানে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া খেলছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়।'
তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এটা কি ভয়ংকর বোলিং? হোল্ডিং উত্তর দেন, ‘ঘন্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে ইংল্যান্ড মিকি মাউসের মতো জোরে বোলিং করছে। এটাকে ভয়ংকর বোলিং বলা যায় না। বরং নেতিবাচক বোলিং বলা যেতে পারে। তবে যাই হোক না কেন টেস্ট ম্যাচ জেতাটাই আসল। আমাকে এই বোলিং দিয়ে আটকে রাখা যাবে। যদি ভিভ রিচার্ডস, গর্ডন গ্রিনিজ বা ডেসমন্ড হেইন্সের কাছে এই গতিতে বোলিং করার চেষ্টা করা হয় তবে বলকে বারবার দর্শক আসন থেকে তুলে আনতে হবে! শুধু তারাই নয়, আমি এমন অনেক ব্যাটারদের নাম জানি যারা আম্পায়ারদের বলবেন, ‘ওদের থামাবেন না, ওদের আরও বাউন্স বল করতে দিন।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।