চতুর্থ দফায় ভোট গ্রহণের পরেই কার্যত জ্বলছে অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক জেলা। ভোট পরবর্তী হিংসায় ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত তিন দিন ধরে অন্ধপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় হিংসার ঘটনায় রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং ডিজিপিকে ডেকে বৃহস্পতিবার ডেকে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তাতে হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। তবে কমিশনের আশঙ্কা ৪ জুন ফল প্রকাশের পর রাজ্যটির আরও বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি ছড়াতে পারে। সেই আশঙ্কায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ৪ জুনের পর রাজ্যটিতে ১৫ দিন পর্যন্ত সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা নিয়ে যাওয়ার আবেদন, এল সুপ্রিম স্থগিতাদেশ
১৩ মে ভোটের সময় থেকেই রাজ্যটির বিভিন্ন জেলায় যেভাবে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তাতে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আধিকারিকদের মতে, পুলিশ হিংসা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে ভোট গণনার পরে ১৫ দিন পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশে ২৫ কোম্পানি সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, চতুর্থ দফার ভোটের পরে অনন্তপুরামু, পালনাড়ু এবং তিরুপতি জেলায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্য সচিব কে এস জওহর রেড্ডি এবং ডিজিপি হরিশ কুমার গুপ্তকে দিল্লিতে তলব করে। নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে হামলা, প্রতিপক্ষের সম্পত্তি, অফিসে অগ্নিসংযোগ, হুমকি দেওয়া, গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি, পাথর ছোড়া ইত্যাদি ঘটনাও ঘটেছে।
নির্বাচন কমিশন মুখ্যসচিব এবং ডিজিপিকে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং সময়মতো চার্জশিট দাখিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তারজন্য সমস্ত পুলিশ সুপারকে আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রসঙ্গত, ভোটের ফল ঘোষণার পরে ১৫ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার জন্য রাজ্যের তরফেই আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
ইতিমধ্যেই পালনাড়ুর জেলা শাসকের বদলি এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। তাছাড়াও কমিশন জেলাশাসক সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছেন পালনাড়ু এবং অনন্তপুরামু জেলার পুলিশ সুপারদের বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও তিরুপতি জেলার পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে, ৩ জেলায় ১২ জন অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্তের জন্য সিট গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।