ডোমকলের জনকল্যাণ ময়দানে বাম-কংগ্রেস জোটের সভা। সেখানে হাজির কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। সেখানে মহম্মদ সেলিমকে জেতানোর ডাক দিলেন অধীর। তিনি বলেন, দরকার হলে জান দিয়ে সেলিমদাকে জেতান। উনি ভালো মানুষ, ভালো সাংসদ, জিতলে মানুষের হয়ে সংসদে কথা বলবেন। তাই ওঁকে জেতানো দরকার। সাফ সওয়াল অধীরের।
একে তো কাঠফাটা গরম। প্রচন্ড গরম মুর্শিদাবাদে। কার্যত গাছের পাতা নড়ছে না। তার উপর রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। সকাল থেকে একের পর এক মহল্লায় প্রচার করছেন বাম নেতারা। কংগ্রেসও তাদের সহযোগিতা করছে। একসময় মুর্শিদাবাদের মাটি কংগ্রেসের বলেই পরিচিত ছিল। সেখানে বাম-কংগ্রেসের মধ্য়ে অতীতে সংঘর্ষ কিছু কম হয়নি। একের পর এক হিংসার ঘটনা হয়েছিল মুর্শিদাবাদে। কিন্তু সেসব আজ অতীত। এখন বাম কংগ্রেসের মধ্য়ে জোটের হাওয়া। একই মঞ্চে বসে থাকেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা।
এই ছবি কিছুটা হলেও কষ্ট দেয় আদি কংগ্রেসের কর্মীদের। যারা দিনের পর দিন বামেদের অত্য়াচারে ঘরছাড়া ছিলেন। তাদের দলই এখন বিজেপিকে, তৃণমূলকে আটকাতে বামেদের হাত ধরেছে।
সেই জোটের মঞ্চ থেকে অধীর বলেন, সকালের সূর্য দেখলেই যেমন বলা যায় দিন কেমন যাবে। তেমনি ডোমকলের জনকল্যাণ ময়দানের সভা দেখে বোঝা যায় সেলিম ভাই জিতছেন। তিনি বলেন, বুথে বুথে এজেন্ট হিসাবে থাকুন। কোনও রিগিং করতে দেবেন না। সব রংবাজি রুখে দেব। নির্বাচন কমিশনকে বলে ডিআইজিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানকার এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে সিবিআই এসেছিল।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আপনার প্রাপ্য। মনে রাখবেন চালু প্রকল্প কেউ বন্ধ করতে পারে না। ওরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। তাহলে ১০০ দিনের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন মামলা করছেন না?
মুর্শিদাবাদ বরাবরই কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তাদের ক্ষমতা ক্ষয়িষ্ণু। অনেকটাই দুর্বল হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। অন্য়দিকে বামেদের সঙ্গে সেই আগের বিবাদ আর নেই কংগ্রেসের। এখন সেলিমের হয়ে ভোট চান অধীর। আবার অধীরকে জেতানোর জন্য আবেদন করেন সেলিম।
বরকত গনি খান চৌধুরীর একসময়ের খাসতালুক। যেখানে একদিন কংগ্রেস-সিপিএমের লড়াই ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সেই ভিন্ন আদর্শের দুই দল এখন একেবারে মঞ্চে লড়ছেন। এই সমীকরণ দেখে এখনও এমন মানুষ আছেন যারা কিছুতেই নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারেন না।