সেই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট থেকেই দেখা গিয়েছিল উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রভাব বিস্তার করেছে বিজেপি। বহু এলাকায় বুথ স্তরে এমন শক্তপোক্ত নেতা তৈরি করতে পেরেছে বিজেপি, যে মামলার পর মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা পদ্ম আঁকা পতাকাটা কখনও ছেড়ে দেন না। আর সেই তৃণমূলস্তরে থাকা নেতা, কর্মীরাই ভরসা গেরুয়া শিবিরের কাছে। কিন্তু এবারের লোকসভা ভোটে কি তারা দলকে উত্তরের সবকটি আসনে জিতিয়ে আনতে পারবে?
এনিয়ে ইতিমধ্যেই নানা কাটাছেঁড়া চলছে। তবে তৃণমূল এবার কার্যত কোচবিহার আসনটিকে একেবারে পাখির চোখ করেছিল। কিন্তু সেখানে শেষ পর্যন্ত তারা কতটা সুবিধা করতে পারবে সেটাই দেখার। এখানে ভোটের পরেই বিজয় মিছিল বের করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের সেই কাণ্ডারিরাই এখন কোচবিহার থেকে তমলুকে ভোট প্রচারে গিয়েছেন। তবে দলের একাংশের মতে, এখানে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তবে ঠিক কোন হিসাবে কোচবিহার আসন নিয়ে এতটা নিশ্চিত তৃণমূল?
দলের একাংশের মতে, এবার সংখ্য়ালঘু ভোটের সিংহভাগই পড়েছে তৃণমূলের দিকে। অন্য়দিকে রাজবংশী ভোটেরও একটা বড় অংশ এবার তৃণমূলের দিকে। কারণ গ্রেটার নেতা অনন্ত রায় বিজেপি ঘনিষ্ঠ হলেও তিনি শেষ পর্যন্ত কতটা সক্রিয় ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে। এসবের নিরিখে খেলা ঘুরে যাওয়ার আশা করছে তৃণমূল। তবে বিজেপির অবশ্য দাবি প্রথম দু দফা ভোটে উত্তরের সব আসনই থাকবে বিজেপির দখলে।
অন্য়দিকে রায়গঞ্জ আসনটি তৃণমূলের দিকে যাবে বলেই বেশ জোরালো সওয়াল করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ২০১৯ সালে এখানে ৬০ হাজারের কিছু বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তবে এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছিল এমন ব্যক্তিকে যাকে গত বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে এবার রায়গঞ্জে ভোট কাটাকুটির সুবিধা কারা কতটা পাবেন সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চাকুলিয়া, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর বামেদের বড় ঘাঁটি। অন্য়দিকে উত্তরদিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় কংগ্রেসের এখনও কিছু প্রভাব রয়েছে। তবে সেই ভোট ঘুরে গিয়ে বাম কংগ্রেসেই থাকবে নাকি তা বিজেপির দিকে ঘুরে যাবে তা নিয়ে হিসাবে নিকেশটা থেকেই গিয়েছে।
তবে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার নিয়ে বেশ নিশ্চিত বিজেপি শিবির। সেই সঙ্গেই জলপাইগুড়ি নিয়ে কিছুটা দ্বিধা থেকেই গিয়েছে। তবে বালুরঘাট আসনটি তৃণমূল নিজেদের দিকে আসবে বলে দাবি করলেও বাস্তবে কি হবে?