সংসদের বাইরে মিমিক্রি করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়েছিল কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী সেটি ফ্রেমবন্দি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে। হাত নাচিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নকল করেছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়তেই তিরষ্কার করেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। তাঁর মন্তব্য, ‘অধঃপতনের সীমা ছাড়িয়েছে।’ একের পর এক বিজেপি নেতা–মন্ত্রীরা আক্রমণ শানান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে এই ঘটনার একমাস গড়ানোর আগেই সামনে এল সৌজন্যের ছবি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এল জগদীপ ধনখড়ের ফোন। শুধু কল্যাণ নন, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেও কথাবার্তা হল বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপালের।
এদিকে উপরাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছার জন্য পাল্টা ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাংসদ কল্যাণ। নিজের এক্স হ্যান্ডলে সে কথা তুলে ধরেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ নিজেই। জন্মদিনে তাঁকে উপরাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে কথা। তাই কল্যাণ জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজের বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। নতুন সংসদ ভবনের বাইরে এই জগদীপ ধনখড়কেই ‘মিমিক্রি’ করেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মিমিক্রির ঘটনায় জগদীপ ধনখড় জানান, এই সব কথা মেনে নেওয়া যায় না। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলে ছিলেন, এটা আসলে শিল্পেরই ধরন। কাউকে আঘাত করতে নয়।
অন্যদিকে আজ, বৃহস্পতিবার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। সকাল থেকে অনেক রাজনৈতিক নেতা–নেত্রীরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানান এক্স হ্যান্ডেলে। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সৌজন্য দেখাতে পিছিয়ে থাকেননি জগদীপ ধনখড়ও। সরাসরি টেলিফোন করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সাংসদ নিজেই এক্স হ্যান্ডেলে সে কথা জানিয়েছেন। কল্যাণ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘আমার জন্মদিনে যে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছে উপরাষ্ট্রপতি তাঁর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। আমি আপ্লুত যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আমার পুরো পরিবারকে আশীর্বাদ জানিয়েছেন। আমার স্ত্রী এবং আমাকে তিনি দিল্লিতে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নৈশভোজের জন্য।’
আরও পড়ুন: নিজের কর্মসূচি ডায়মন্ডহারবারেই সীমাবদ্ধ রাখছেন অভিষেক, বাড়ছে কৌতূহল
এছাড়া বাংলার সঙ্গে জগদীপ ধনখড়ের সম্পর্ক বহুদিনের। রাজ্যপাল হিসেবে তিনি যখন দায়িত্বে ছিলেন, তখনও সম্পর্ক খুব মধুর ছিল না তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। বরং বারবার সংঘাতের ছবি দেখা গিয়েছে। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অঙ্গভঙ্গি করার যে অভিযোগ ওঠে সেটাও নজিরবিহীন। যদিও মুখে কল্যাণ বলেছিলেন, তিনি জগদীপ ধনখড়কে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে যথেষ্ট সম্মান করেন। শীতকালীন অধিবেশনে সংসদের দুই কক্ষে একের পর এক সাংসদ সাসপেন্ড হয়েছিলেন। তখন মিমিক্রি করেছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। বিজেপি নেতা সুনীল দেওধর সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, এই হল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আসল রূপ। এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ধনখড়কে ফোন করে দুঃখপ্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদী।