্মেগডিক্যাল কলেজে ভরতিতে অনিয়মের অভিযোগের মামলাকে কেন্দ্র করে বেনজির সংঘাতে জড়িয়ে ছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল ও ডিভিশন বেঞ্চ। তারপরে এই সংক্রান্ত মামলা শুনানির দায়িত্ব নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা করেছিলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা ইতিশা সোরেন। সেই সংক্রান্ত মামলায় ওই ছাত্রীকে ভরতির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চ। তা সত্ত্বেও তাঁকে ভরতি না করিয়ে তিনদিন ঘোরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রীর বাবা সুনীল সোরেন।
আরও পড়ুন: মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষক-চিকিৎসকদের ৭৫% উপস্থিতি বাধ্যতামূলক, নির্দেশ কমিশনের
পড়ুয়ারা বাবার দাবি, আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে জাল শংসাপত্র দেখিয়ে যাঁরা ভরতি হয়েছে, তাঁদের পড়ুয়া হিসেবে গণ্য করা যাবে না। একইসঙ্গে আবেদনকারীকে অর্থাৎ ওই ছাত্রীকে ভরতি করার নির্দেশ দিয়েছিল। ১৮ জানুয়ারি আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে ১০ দিনের মধ্যে ভরতি না করা হলে তা আদালত অবমাননা করা হবে। সেইমতো ১৯ থেকে ২২ জানুয়ারি ৩ দিন ভরতির জন্য মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। কিন্তু ভরতির লিঙ্ক পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
যদিও ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ উৎপল দাঁয়ের দাবি করেন, যে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জাল শংসাপত্র দিয়ে ভরতি হওয়া পড়ুয়াদের বহিষ্কার করতে বলেছিলেন। তবে ইতিশাকে ভরতির ব্যাপারে কোর্টের পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে বলেছিলেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা অনিরুদ্ধ নিয়োগী বলেন, ১৮ তারিখ ওই ছাত্রীকে ভরতির ব্যাপারে নির্দেশ দেখেছিলেন তিনি। তবে ওইদিন কোর্ট আলাদা নির্দেশ দেওয়ায় তা স্থগিত হয়ে যায়। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ১৪ টি জাল শংসাপত্রের প্রমাণ পায়। তাঁদের নিয়োগ বাতিল করেছে। এই মুহূর্তে এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইতিশা সোরেনের অভিযোগ ছিল, গত বছরের মে মাসে তিনি নিট দিয়েছিলেন। তার ফল প্রকাশ হয়েছিল গত জুলাইয়ে। তাতে তাঁর র্যাঙ্ক হয়েছিল ২৮৩১৯। তিনি একজন তপশিলি উপজাতিভুক্ত প্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, তিনি প্রথম এবং দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পরেও মেডিক্যাল কলেজে ভরতি হতে পারেননি। অথচ অনেকেই ভুয়ো শংসাপত্র তৈরি করে ভর্তি হয়েছেন। সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের কাছে জবাব চেয়েছিলেন। এর পাশাপাশি ডিরেক্টরেট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন দেবাশিস ভট্টাচার্যকেও তলব করেছিলেন। এর আগে বিচারপতি তপসলি জাতিভুক্ত এবং উপজাতিভুক্ত প্রার্থীদের শংসাপত্রের প্রতিলিপিও আদালতে জমা দিতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তখন বিচারপতি জানিয়েছিলেন, যদি সরকারি মেডিক্যালে ভরতি হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে অবিলম্বে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হবে।