মণিপুরের ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় আজ, সোমবার নিন্দাপ্রস্তাব আনল তৃণমূল কংগ্রেস। এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় তুমুল হই–হট্টগোল শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। তখন পাল্টা আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই অবস্থায় তুমুল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ। মণিপুর ইস্যুতে বিধানসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডা প্রকাশ্যে চলে এল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, ‘ডোন্ট টক রাবিশ’। পাল্টা বাংলায় নারী নির্যাতন নিয়ে সরব হয় বিজেপি।
এদিকে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। জাতীয় স্তরে বিজেপিকে ঠেকাতে ২৬টি দল নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ইন্ডিয়া জোট। সেই জোটের সরকার ক্ষমতায় এলে বিজেপির প্রত্যেকটি কেসের বিচার হবে বলে আজ বিধানসভায় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘বাংলা নিয়ে সারাদিন গালাগালি করছেন। ১৬০টি টিম পাঠিয়েছেন। কুকুর ঘেউ ঘেউ করলেও টিম পাঠানো নয়। বিড়াল কামড়ালেও টিম পাঠানো হয়। ইন্ডিয়া ক্ষমতায় এলে সব কেসের বিচার হবে। আর মণিপুর সামলাতে প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ। তিনি বিদেশে যেতে পারেন, মণিপুরে যান না। আপনারা মণিপুর শান্ত করতে না পারলে আমাদের দায়িত্ব দিন। যাঁরা মণিপুর নিয়ে আলোচনায় বাধা দিচ্ছেন, তাঁরা দেশদ্রোহী।’
অন্যদিকে এই নিয়ে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই বিষয়ে হট্টগোল করে শুভেন্দু বিধানসভায় বলেন, ‘মণিপুরের ঘটনা সেই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অন্য রাজ্য নিয়ে আলোচনা করার অধিকার নেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার। এটা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বিষয়। তাই এই বিষয় নিয়ে কোনও আলোচনার অধিকার নেই। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব। বাংলা সেনসেটিভ নয়? ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন থেকে পর পর রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং মৃত্যু হয়েছে। আপনাদের গুন্ডারা খুন করেছে।’ মণিপুর ইস্যু নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব আনে রাজ্য সরকার। সেটা বিনা বাধায় পাশ হয়ে গিয়েছে। যেহেতু বিজেপি ওয়াকআউট করে বেরিয়ে যায়। যদিও শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘ভোটাভুটি করতে দেয়নি।’
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি, ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হয়েছে
তারপর ঠিক কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী চড়া সুরে শুভেন্দুর উদ্দেশে বলেন, ‘ডোন্ট টক রাবিশ। মণিপুর দেশের জ্বলন্ত ইস্যু। বাংলা এগোচ্ছে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন না। বেটি পড়াও বেটি জ্বালাও। বাংলাকে গালাগালি দেয়। একশোর বেশি দল পাঠিয়েছে। এবার থেকে আমিও টিম পাঠাব। মণিপুর নিয়ে আলোচনা হলে গঠনমূলক আলোচনা হবে। দেশ আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ঝগড়ার কথা বলছি না। মণিপুর সংবেদনশীল বিষয়। আমি লিখেছিলাম কারণ আমি স্বরাষ্ট্রটা বুঝি। আমি শান্তির কথা বলতে যাচ্ছিলাম। লজ্জা করে না গুলি চালায়। মণিপুরকে রক্ষা করতে হবে। এটা আমাদের সাংবিধানিক কর্তব্য। দেশের মধ্যে প্রথম আমাদের রাজ্য প্রস্তাব এনেছে। বাকি বিরোধী রাজ্যকেও আনতে বলব। আইন জানে সব হরিদাস পাল। দু’দিন বিজেপিতে এসেছেন, বেশি জ্ঞান দেবেন না। প্রত্যেকদিন বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করছেন। ভেবেছিলাম আলোচনা করব। কিন্তু বিজেপি আলোচনা চায় না।’