সিবিআই নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রকের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছিলেন তিনি। তাই তাঁকে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা নিজেই সরাসরি সতর্ক করে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষকে বলে সূত্রের খবর। বিজেপি সূত্রে খবর, সোমবার দলের হেস্টিংসের অফিসে অমিত মালব্যর মাধ্যমে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলেন নড্ডা। তখনই ভবিষ্যতে যাতে সিবিআই বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিয়ে এমন মন্তব্য না করেন তার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয় তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে গুঞ্জন ওঠে তীব্র মতানৈক্যের কারণে দূরত্ব বাড়ায় বিজেপি ছাড়তে চলেছেন দিলীপ।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? পর পর তিনদিন সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি সিবিআইকে পরোক্ষে ‘পোষমানা কুকুর’ বলে ইঙ্গিত করেছিলেন। প্রশংসা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অধীনস্থ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)। এমনকী সিবিআই আধিকারিকদের একাংশ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে যান বলেও মন্তব্য করেছিলেন। অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে তাঁদের ‘সেটিং’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন। আর রাজ্য নেতৃত্বতে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিলেন, হিম্মত থাকলে কলকাতায় বিজেপিকে জিতিয়ে দেখান।
তাহলে কী বিজেপি ছাড়ছেন দিলীপ ঘোষ? এই প্রশ্ন উঠতেই মেদিনীপুরের সাংসদ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি রাজ্য সভাপতির পদকে সম্মানের সঙ্গে ধরে রাখার জন্য যা করার করেছি। ফলে বিজেপি ছাড়া নিয়ে যারা দিবাবপ্ন দেখছেন, তারা দেখতেই পারেন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি বিজেপিতে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আমি আরএসএসের আদর্শে দীক্ষিত। সংসার না করে বহু বছর আমি সংঘের প্রচারক হিসাবে কাজ করেছি। সংঘের নির্দেশেই আমি বিজেপিতে এসেছিলাম।’
সিবিআই নিয়ে কেন তিনি এই ধরনের মন্তব্য করলেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তবে এই প্রশ্নের জবাব তাঁর প্রস্তুত রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমি দল বা সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে কিছু বলিনি। আমি যেমন দলের কাছে দায়বদ্ধ, তেমন কর্মীদের কাছেও দায়বদ্ধ। তৃণমূলের সন্ত্রাসে মৃত কর্মীদের পরিবারের কাছেও আমি দায়বদ্ধ। তাঁদের মনের কথাই আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে। আমি সমালোচনা করেছি স্বজন হারানো বিজেপি পরিবারের প্রতিনিধি হিসাবে। আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই তদন্তে সত্যিই কেউ সুবিচার পেয়েছেন? তদন্তের কোনও অগ্রগতি কি দেখা যাচ্ছে?’ এই উত্তরই দেবেন ক্ষুব্ধ দিলীপ।