বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > Bikash Sinha Passes Away: জনতার যুক্তির আঁচে পরমাণুকে যাচাই করতে যান তিনি, বাংলার ‘ওপেনহাইমার’ বিকাশ সিংহ

Bikash Sinha Passes Away: জনতার যুক্তির আঁচে পরমাণুকে যাচাই করতে যান তিনি, বাংলার ‘ওপেনহাইমার’ বিকাশ সিংহ

বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ (টুইটার)

পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপণের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন হচ্ছে, এর বিপক্ষে জনমত তৈরি করতে মাঠে নেমেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী সুজয় বসু। তখন আর চুপ করে বসে থাকেননি বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। তিনি কলম ধরেছেন।

বিকাশ সিংহ (১৯৪৫-২০২৩)

 

পরমাণু বিষয়টি বরাবরই বড় বিড়ম্বনায় ফেলেছে সিপিএমকে। ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকার থেকে বেরিয়ে আসার কারণ ছিল ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি। তার পর রাজ্যে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপণ নিয়েও অস্বস্তিতে পড়তে হয় তৎকালীন বাম সরকারকে।  প্রথমে সুন্দরবনে পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের হরিপুরে। প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন বিজ্ঞান ও পরিবেশকর্মীরা এবং স্থানীয় মানুষ। এই প্রতিবাদ শুধু মাঠে-ময়দানে নয়, চলে বৌদ্ধিক স্তরেরও। ভাল-মন্দ নিয়ে বৌদ্ধিক স্তরের চর্চায় যে দু’জন বিজ্ঞানী অগ্রণী ভূমিকা নেন তাঁদের মধ্যে একজন হলেন সুজয় বসু এবং অন্য বিকাশ সিংহ। প্রথমজন পরমাণু বিদ্যুতের বিপক্ষে দ্বিতীয় জন বিপক্ষে। প্রথম জন আগেই প্রয়াত হয়েছেন। শুক্রবার চলে গেলেন বিকাশ সিংহ।

বিজ্ঞানীর কাজ কী? শুধু কি গবেষণাগারে বসে নিরন্তর গবেষণা করে যাওয়া? বিকাশ সিংহের কাছে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি নিশ্চিত ভাবে বলতেন না। যে মানব সমাজের অগ্রগতির জন্য বিজ্ঞানী গবেষণা করছেন, তাঁর কাজ সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দেওয়া। জনতার বোধগম্য করে বিষয়টিকে রাখা। 

পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপণের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন হচ্ছে, এর বিপক্ষে জনমত তৈরি করতে মাঠে নেমেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী সুজয় বসু। পাল্টা কলম ধরেছেন বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। সাধারণ মানুষের মতো করে বোঝাচ্ছেন, কেন পরমাণু বিদ্যুতের প্রয়োজন। সেমিনারে যাচ্ছেন। বক্তব্য রাখছেন। বিপক্ষের যুক্তিতে পর্যুদস্ত হচ্ছেন। পাল্টা যুক্তি তুলে ধরছেন।

(পড়তে পারেন। প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর)

দরকার ছিল কি?  তিনি তখন গবেষণা সংস্থার মাথায় বসে আছেন। তার জন্য প্রয়োজন কি এসব করার। সফল ভাবে প্রকল্প রূপায়ন যাতে হয় তার দায় তো সরকারের। তাঁর কেন কলম ধরার প্রয়োজন? তিনি তো মুখপাত্র নন। তবু তিনি ধরেছেন। বিজ্ঞানী হিসাবে তিনি যেটাকে সঠিক মনে করেন তার পক্ষে। 

এই বৌদ্ধিক লড়াইয়ের একটা উল্টো দিকও আছে। এতে মানুষ শিক্ষিত হয়। পক্ষে-বিপক্ষের যুক্তিতে না জানা অনেক কিছু জানতে পারে। ক্রমশ বিরল হচ্ছে এই সব প্র্যাকটিস। 

লাগাতার আন্দোলনের জেরে রাজ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলেও লেখালিখি বন্ধ করেননি বিকাশবাবু। তিনি লেখালিখি চালিয়ে গিয়েছেন। বিজ্ঞান গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে তিনি সহজ ভাষায় লিখেছেন। আলোচনা করেছেন। আবার প্রকৃতিক বিপর্যয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেন মানুষকে সতর্ক থাকা উচিত তা নিয়ে সংবাদপত্রের উত্তর সম্পাদকীয় লেখায় নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। সংস্কারের বিরুদ্ধেও যুক্তি দিয়ে লেখা সাজিয়েছেন।

আনন্দবাজারের প্রকাশিত তাঁর একটি প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল, ‘অনন্ত যুগও এক দিন ফুরোবে’। মূলত ব্ল্যাক হোলকে নিয়ে লেখা প্রবন্ধ। সেখানে তিনি লিখেছেন,  ‘আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের যুগ শুরু হয়েছিল ১,৪০০ কোটি বছর আগে। এই অনন্ত যুগ বাস্তবে অনন্ত নয়। ব্রহ্মাণ্ডের জীবনেরও শুরু আছে, শেষ আছে। অনেকটা মানুষের জীবনের মতো। তবে সময়ের পরিধি একেবারেই ভিন্ন। মানুষের জীবন ১০০ বছরের মতো। ব্রহ্মাণ্ডের জীবন তিন-পাঁচ হাজার কোটি বছর।’ কত সহজ, সাবলীল ভঙ্গিতে লেখা। 

বাংলায় যে অভ্যাসটা শুরু করেছিলেন বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র, জগদীশচন্দ্র বসু, মেঘনাদ দত্ত, সে অভ্যাস নিজের মতো করে জারি রেখেছিলেন বিকাশ সিংহ।

ভারতের পরমাণু বিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছিলেন বিকাশ সিংহ। ভাবা অ্যাটোমিক সেন্টারের সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে গবেষণার ক্ষেত্রে অসমান্য কৃতীত্বের জন্য তিনি জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকেডেমির ফেলো নির্বাচিত হন।  ১৯৮৭ সালে তিনি ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টারের ডিরেক্টর নিযুক্ত হন।২০০৯ সাল পর্যন্ত সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স-এর ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৫ সালে মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজ পরিবারের জন্ম হয় বিকাশ সিংহের। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতকস্তরের পড়াশুনা করেন তিনি। পরে উচ্চতর পঠনপাঠনের জন্য ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ভারতের পরমাণু গবেষাণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। ভাবা অ্যাটোমিক সেন্টারের সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে গবেষণার ক্ষেত্রে অসমান্য কৃতীত্বের জন্য তিনি জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকেডেমির ফেলো নির্বাচিত হন। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বোর্ডেরও সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে পদ্মশ্রী পান এবং ২০১০ সালে পদ্মভূষণ।

সদ্য প্রয়াত হয়েছেন বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামের প্রাক্তন অধিকর্তা সমর বাগচী। যিনি বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য জীবনে শেষ দিন পর্যন্ত কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছেন। মাঠে-ঘাটে স্কুলে কলেজে গিয়ে মানুষকে বিজ্ঞান বুঝিয়েছেন। মতাদর্শগত ভাবে দুজনে একেবারে বিপরীত মেরুতে থাকলেও। একটা বিষয়ে তাঁরা এক, বিজ্ঞান আর্শীবাদ না অভিশাপ! তা জনতার যুক্তির আগুনে ফেলেই যাচাই করিয়ে নিতে হবে, এটা দুজনেই বোধহয় বিশ্বাস করতেন।  

বাংলার মুখ খবর

Latest News

রাত টপকালেই রেজাল্ট! কীভাবে হাই-মাদ্রাসা, ফাজিল, আলিমের রেজাল্ট দেখা যাবে? গোপনে বিয়ে, মেয়ের বয়স সবে ১১ মাস; এক বছরে দ্বিতীয়বার বাবা হলেন বাঙালি অভিনেতা! সুকান্তর জেলায় মাধ্যমিকে ফাটাফাটি রেজাল্ট, দেখিয়ে দিল বালুরঘাট ‘আমি কট্টর হিন্দু’, রাতারাতি ধর্ম বদল! ক্ষমা চাইলেন গোবিন্দার ভাগ্নি, সত্যিটা কী রাজভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না চন্দ্রিমা, কড়া রাজ্যপাল, পুলিশেও লাগাম IPL 2024: শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর ম্যাচে RR-এর থেকে জয় ছিনিয়ে নিল SRH! ১ রানে জিতল 'বাংলায় অনেক বড় বদল হবে, সময়ের অপেক্ষা, এক নারীর হাত ধরে যা…'বললেন মোদী বাবা CPIM-র হোলটাইমার, ডাক্তার হয়ে কষ্টের দাম দিতে চায় মাধ্যমিকে দ্বিতীয় উদয়ন T20 WC 2024: কে হবে বুমরাহর পেস পার্টনার? হার্দিকের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন রোহিত কবে থেকে CAA-র আওতায় ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে? ভোটের মধ্যে জানিয়ে দিলেন শাহ!

Latest IPL News

IPL 2024: শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর ম্যাচে RR-এর থেকে জয় ছিনিয়ে নিল SRH! ১ রানে জিতল T20 WC 2024: কে হবে বুমরাহর পেস পার্টনার? হার্দিকের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন রোহিত দলে হার্দিকের কোনও বিকল্প হতে পারে না- পান্ডিয়াকে নিয়ে নিজের যুক্তি দিলেন আগরকর আমাদের কয়েকটা জিনিস এখনও ঠিক করতে হবে- জিতেও নিজেদের ভুল খুঁজছেন কেএল রাহুল IPL ও বিশ্বকাপ এক নয়, আর সেজন্য বিরাটকে দরকার! রোহিতের হাসির মধ্যেই বললেন আগরকর বড় সমস্যার সামনে CSK! টিমের একাধিক বোলারের পরের ম্যাচ খেলা অনিশ্চিত, চিন্তায় দল KKR-এর জন্য বড় ধাক্কা! দেশে ফিরলেন নাইটদের তারকা বিদেশি ক্রিকেটার LSG-র কাছে ম্যাচ হেরেও মন জিতলেন বুমরাহ! খুদে ভক্তের হাতে তুলে দিলেন বিশেষ উপহার কেরল থেকে উঠে এসে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন…কেন একথা বললেন সঞ্জু স্যামসন? আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতকে খেলতে হবে লাহোরে, ভেনু প্রকাশ পাক বোর্ডের

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.