সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে নবীন–প্রবীণ দ্বন্দ্ব লেগেছিল। সেটা নিয়ে দলের অনেক নেতা–মন্ত্রীই নানা কথা বলেছিলেন। সুতরাং আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে পড়ে দুটি গোষ্ঠী। তবে তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে কোনও দূরত্ব তৈরি হয়নি। অনেকে চাউর করেছিলেন, ডায়মন্ডহারবারেই আটকে থাকবেন অভিষেক। লোকসভা নির্বাচনে অল–আউট খেলবেন না। মাঠে নামবেন না। সেটা যে হচ্ছে না তা পৈলানের সভা থেকেই বলেছিলেন অভিষেক। আর আজ, মঙ্গলবার ১ মাঘ দেখা গেল, তৃণমূল কংগ্রেস তাদের সমস্ত এক্স হ্যান্ডেলের কভার পিকচার পাল্টে ফেলেছে। আর সেখানে দেওয়া ছবিতে সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর একটু পিছনে অভিষেক।
এখান থেকেই বার্তা একেবারে স্পষ্ট। সেটা হল, দলের শেষ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক ও দুই হিসাবে দু’জনকে দেখা যেতেই পারে। কিন্তু সমীকরণ এবং রসায়ন স্পষ্ট। তাঁদের মধ্যে কোনও দূরত্ব নেই। এগুলি যাঁরা চাউর করছেন তাঁদের কোনও উদ্দেশ্য আছে। ছবি দিয়ে যেন সেই বার্তাই দিয়ে দিলেন মমতা–অভিষেক। অর্থাৎ মমতা–অভিষেকের মধ্যে দ্বন্দ্বের যে খবর চাউর হয়েছিল, সেটা অতীতের মতই এবারও ভুলভাল। তাহলে কবে দেখা যাবে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে? তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, শীঘ্রই বাংলাজুড়ে মিছিল–মিটিং করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে সেই বার্তা দিতেই এই কভার পিকচার বদল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। আর একসঙ্গে যে কোনও বড় সমাবেশ যে তাঁরা করবেন সেটা এই ছবি থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কারণ দু’জনেই করজোড়ে জনগণকে নমস্কার জানাচ্ছেন। প্রতিটি সভা–সমাবেশে এটা করতে দেখা যায় তাঁদের। তৃণমূল সুপ্রিমো এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যখন এই ছবি দিয়েছেন তখন লোকসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক নিজে প্রার্থী থাকবেন। তাই ডায়মন্ডহারবারে সময় দিতেই হবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন নির্দেশ দেবেন সেটাও পালন করার চেষ্টা করবেন তিনি।
আরও পড়ুন: কিশোরী জন্ম দিল কন্যাসন্তানের, তদন্তে নেমে কড়েয়া থানার পুলিশ গ্রেফতার করল যুবককে
অন্যদিকে সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে একটা মতান্তর তৈরি যে হয়েছিল সেটা সঠিক। কিন্তু সেটা মিটেও গিয়েছে। তার উপর দলের নেতা–কর্মীদের বার্তা দিতেই এই ছবি বদল। সংসারে থাকতে গেলে মতান্তর তো ঘটেই। সেটা যত তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলা যায় সেটাই মঙ্গল। আর তাই ঘটেছে। এই মতান্তর খুব স্বাভাবিক। এত বড় দল চালাতে গেলে দু’জনের মধ্যে মাঝেমধ্যে মতের অমিল হতেই পারে। কিন্তু ইতিবাচক দিক হল, আলোচনার টেবিলে বসে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া। সুতরাং লোকসভা নির্বাচনী প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে জনসভার কৌশল দু’জনের ভূমিকাই থাকবে।