বেসরকারি বাসে ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) বসানো নিয়ে জট কাটছে না। পরিবহণ দফতরের নতুন একটি বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে পুনরায় বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে দফতরের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে পরিবহণ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ৩১ মের মধ্যে যে সমস্ত বাসে ভিএলটিডি লাগানো হয়নি তাদের সিএফ বাতিল করা হবে। সিএফ পাওয়ার জন্য আবার নতুন করে তাদের আবেদন করতে হবে। ১ জুন থেকে সিএফ না করানো পর্যন্ত দৈনিক ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। এই নিয়ে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে বেসরকারি বাস সংগঠনগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাড়িতে ট্র্যাকিং ডিভাইস বসানোর জন্য সময়সীমা বাড়ানো হল আরও দুমাস
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বেসরকারি বাসে ভিএলটিডি লাগানো নিয়ে একমত হয়েছিল বেসরকারি সংগঠন এবং পরিবহণ দফতর। সেই সময় জানানো হয়েছিল, সিএফের সময় ভিএলটিডি বসালেই চলবে। তবে এরইমধ্যে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করায় অসন্তুষ্ট বেসরকারি সংগঠনগুলি। তাদের মতে, তারা এখন বাসে ভিএলটিডি বসানোর কাজ করছে। অথচ সরকার নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টিকে আরও জটিল করছে। এর ফলে পারমিট রিনিউ এবং গাড়ির নাম বদলের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আগে পরিবহণ দফতর জানিয়েছিল ৩১ মের মধ্যে যারা ভিএলটিডি বসানোর কথা দিয়েছিলেন তাদের ওই সময়ের মধ্যে এই যন্ত্র লাগালে চলবে। তবে যারা ভিএলটিডি লাগায়নি তাদের সিএফের সময় ভিএলটিডি বসাতে হবে। তারপরেও ফের কেন এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বেসরকারি বাস মালিকরা।
প্রসঙ্গত, ভিএলটিডি বসানো নিয়ে টানাপোড়া চলছে গত বছর থেকে। কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের নিয়ম মেনে প্রথমে ২০২২ সালে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভিএলটিডি বসানোর সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল ওই সময়ের মধ্যে ভিএলটিডি না বসালে দৈনিক ৫০ টাকা করে জরিমানা করা হবে। এনিয়ে প্রতিবাদ জানান বাস মালিকরা। পরে দফায় দফায় এ নিয়ে বেসরকারি সংগঠনের সঙ্গে পরিবহণ দফতরের বৈঠক হয়। শেষমেষ ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে পর্যন্ত সেই সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু, তাতে নানান অসুবিধার কথা জানান বেসরকারি বাস মালিকরা। ফলে সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ মে করা হয়। তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষে বাস মালিকরা দাবি জানান সিএফের সময়ে ভিএলটিডি বসানোর সুযোগ দেওয়া হোকম সেই মতো সিএফের সময় ভিএলটিডি বসানোর পক্ষে সায় দেয় পরিবহণ দফতর। কিন্তু, এরই মধ্যে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করায় ক্ষুব্ধ বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি।
তবে এ বিষয়ে পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দফতরের তরফে সবরকমভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফে যে নিয়ম সারাদেশে চালু করা হয়েছে সেই নিয়ম কার্যকর করার জন্যই রাজ্য পরিবহণ দফতর এই পদক্ষেপ করেছে। উল্লেখ্য, এই যন্ত্রের সাহায্যে কোথায় কোন বাস রয়েছে তা সহজেই জানা যাবে। তাছাড়া কোন যাত্রী বিপদে পড়লে প্যানিক বটনের সাহায্যে অতি সহজে পুলিশ খবর পেয়ে যাবে।