শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের বাপাতলার কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়ছে মিগজাউম। শেষ ছ’ঘণ্টায় সমুদ্রের উপর এর গতিবেগ ছিল ১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। তবে আছড়ে পড়ার সময়ে মিগজাউমের গতি ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। ১১০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বয়েছে। মিগজাউমের প্রভাব অন্ধ্রপ্রদেশের তুলনায় তামিলনাড়ুতেই বেশি পড়েছে। ইতিমধ্যে চেন্নাইয়ে বেশ কিছু লোক মারা গিয়েছেন। জলমগ্ন শহরের বহু এলাকা।
আগেই আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘূর্ণিঝড় শক্তি বাড়িয়ে আঘাত হানবে দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। ল্যান্ডফলের সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হতে পারে বলেও জানানো হয়েছিল। রবিবার থেকেই চেন্নাই, চেঙ্গালপেট, কাঞ্চিপুরম, তিরুভাল্লুর সহ একাধিক জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে একপ্রকার বিপর্যস্ত চেন্নাই। সরকারি আধিকারিকদের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সবরকম ভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আগেভাগেই নীচু এলাকাগুলি থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। তাঁদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রায় ৩০০টি ত্রাণ শিবিরের।
আরও পড়ুন: পঞ্জাবের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি অনুষ্টুপের, ভাঙলেন সৌরভের নজির, জিতে নকআউটে বাংলা
চেন্নাই যে কতটা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে, সেটা বোঝা গিয়েছে ভারতীয় দলের তারকা স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের একাধিক টুইটের মাধ্যমে। অশ্বিন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। এদিন যেমন একটি টুইটে লিখেছেন, ‘৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় হয়ে গেল, আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। অনুমান করছি, অনেক জায়গায় এই একই অবস্থা। জানি না, আমাদের হাতে কী বিকল্প রয়েছে।’
অন্ধ্রপ্রদেশে সরকার আট জেলায় আগে থেকেই সতর্কতা জারি করেছিল। তিরুপতি, নেল্লোর, প্রকাশম, বাপাতলা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী, কাকিনাড়া, কোনাসীমার প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছিল। উপকূল থেকে আগে থেকেই বাসিন্দাদের সরানো হয়েছিল। পুদুচেরির উপকূলবর্তী এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আছড় পড়ার আগে থেকেই চেন্নাই বানভাসি হয়ে উঠেছিল।কোথাও হাঁটুসমান জল ছিল, কোথাও আবার কোমর সমান। কোথাও রাস্তা যেন খরস্রোতা নদী! আর ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তেই সেই তাণ্ডব আরও বেড়ে যায়। দু’দিন ধরে বৃষ্টি এবং তার জেরে তৈরি হওয়া বন্যা পরিস্থিতির জেরে চেন্নাইয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। কোট্টুরপুরম, মুথিয়ালপেট, তাম্বারম, অশোকনগর, কাট্টুপক্কম, পেরুনগুড়ির মতো শহরের বেশির ভাগ এলাকা কয়েক ফুট জলের তলায় চলে গিয়েছে।
শহরের বেশির ভাগ এলাকা জলের তলায় চলে যাওয়ায় রবিবার থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। পানীয় জলের সমস্যাও শুরু হয়েছে কোথাও কোথাও। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জলমগ্ন এলাকাগুলি ঘুরে উদ্ধারকাজের পাশাপাশি ত্রাণ বিলির কাজও শুরু করেছে।