জলপাইগুড়িতে ঝড়ের রাতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। তারপর উদ্ধারকাজ থেকে শুরু করে মাঝরাতে হাসপাতালে যাওয়া এবং সকাল হতেই আহতদের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। যাঁর বাড়ি কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ি ৬২০ কিমি দূরে। তিনি সে রাতেই পৌঁছে যান। আর যাঁর বাড়ি ৩০০ কিমি দূরে বা চার ঘণ্টার রাস্তা তিনি কিন্তু যাননি। আর এবার এই ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসে বিজেপি নেতাদের তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুকান্ত মজুমদার–শুভেন্দু অধিকারীকে একসঙ্গে বাংলার ‘কুলাঙ্গার’ এবং ‘গদ্দার’ বলে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আজ, শনিবার লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তপনে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানের মঞ্চ থেকেই ভূপতিনগরের ঘটনা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতাকে গ্রেফতার করা নিয়ে কেন্দ্রের সরকারকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বালুরঘাটের বিদায়ী সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে আক্রমণ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে তাঁর নাম করেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এখানে ওই কুসান্তবাবু আছেন, আর ওদিকে আছে গদ্দার। এরা মনে করে, যা বলবে তাই করতে হবে। গায়ের জোরে চালাবে। ওরা বাংলার গদ্দার, বাংলার কুলাঙ্গার।’
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা না করলে কিছু করার নেই’, ডানলপ বন্ধে বিজেপিকে দুষলেন রচনা
নাম না করলেও সকলেই বুঝতে পারেন এঁরা দু’জন কারা। কারণ শুভেন্দু অধিকারীকে প্রথম থেকেই গদ্দার বলে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সুকান্ত মজুমদারের নাম বিকৃত করলেও তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। যদিও পরে সুকান্তের নাম ধরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘চ্যালেঞ্জ করছি সুকান্তবাবুকে। ভোট দেওয়ার আগে আপনি আর গদ্দার বলেননি, বাংলাকে ১০০ দিনের টাকা দেওয়া যাবে না? বাংলার বাড়ি দেওয়া যাবে না? রাস্তা দেওয়া যাবে না? কোনও দিন সারি–সারনা ধর্ম নিয়ে কথা বলেছেন দিল্লিতে গিয়ে? আপনারা বাংলার টাকা বন্ধ করেছেন, আপনারা বাংলার গদ্দার। আপনারা বাংলার কুলাঙ্গার। আপনারা বাংলার ভাল চান না। আপনারা উত্তরবঙ্গের এবং দক্ষিণবঙ্গেরও ভাল চান না।’
তবে মুখ্যমন্ত্রী ঝড়ের রাতে জলপাইগুড়ির মানুষের পাশে দাঁড়ালেও কাছে বাড়ি হয়েও সেখানে আসেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আজ শনিবার জনসভা থেকে জলপাইগুড়ির ঝড় নিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগেও উত্তরবঙ্গের সভায় এসে প্রধানমন্ত্রী ঝড় নিয়ে কোনও কথা না বলায় সরব হন তিনি। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এত বড় ঝড় হয়ে গেল, অথচ বিজেপির নেতারা সেখানে দেখতেও গেলেন না!’