ডানলপ কারখানার হতশ্রী চেহারা দেখে মন খারাপ হয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর। এখানে এতদিন বিজেপির সাংসদ ছিলেন। তার আগে বামফ্রন্টের জমানা। কেউই কিছু করলেন না এই কারখানার জন্য। আর তা দেখে জেনেই মন খারাপের কথা জানালেন তিনি সকলকে। আবার এসেছে একটি লোকসভা নির্বাচন। বিজেপির বিদায়ী সাংসদ প্রচার করতে বেরিয়েছেন। প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীও। যিনি এমন অবস্থা দেখে নিজের দুঃখ অকপটে তুলে ধরলেন। একসময় যে ডানলপের নাম ছড়িয়েছিল গোটা দেশে সেই হুগলির সাহাগঞ্জের কারখানা আজ শ্মশান। এমনই মনে করছেন হুগলি জেলার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী এটার জন্য দায়ী করলেন কেন্দ্রীয় সরকারকেই।
এই হুগলির ডানলপ কারখানার জন্য উদ্যোগ নিতে বারবার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি অভিযোগ রয়েছে এমনই। তবে সম্প্রতি প্রচারে বেরিয়ে সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে রচনা দাবি করেছিলেন, ‘চারদিকে কারখানার ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকেছে। মুখ্যমন্ত্রীর আমলে কত কারখানা হয়েছে।’ আর এবার হুগলির এই কঙ্কালসার ডানলপের মাটিতে দাঁড়িয়ে তাঁর কথা, ‘এত কর্মী, এত বড় একটা সংস্থা এভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে! খুব খারাপ লাগল দেখে। দিদি অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা না করলে কিছু করার নেই।’
আরও পড়ুন: ‘চা–বাগানে পাট্টা দিচ্ছি, সবাই পাবেন’, এবার প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে ঘোষণা মমতার
রচনার কথায় বেশ বিপাকে পড়ে যায় বিজেপি। কারণ এখানে লকেট চট্টোপাধ্যায় জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। বিজেপির এই নেত্রী এবারও হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী। কিন্তু ডানলপ নিয়ে তাঁকে আগে কিছু করতে দেখা যায়নি। তবে রচনার তোলা অভিযোগ অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘ডানলপে যা জিনিসপত্র ছিল সব লুট করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ডানলপ কারখানাকে মুখ্যমন্ত্রী শেষ করেছেন। ডানলপের এই অবস্থার জন্য মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী।’ এখানের সাংসদ হয়েও মুখ্যমন্ত্রীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়ায় মেনে নিচ্ছেন না সাধারণ মানুষজন।
তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছে, প্রচারে বেরিয়ে বাঁশবেড়িয়া হয়ে ডানলপ আবাসন চত্বরে ঢুকতে। এখানের বাসিন্দারা পানীয় জল সঠিকভাবে পাচ্ছেন না বলে রচনাকে অভিযোগ জানান। ডানলপ কারখানায় শেষবারের মতো তালা ঝোলে ২০১১ সালে। তখন সবে ক্ষমতায় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সুতরাং তাঁর ঘাড়ে বিজেপি দোষ চাপিয়ে পার পাবেন না বলে বলছেন রচনা। আর ২০১২ সালে ডানলপকে লিকুইডেশনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সুতরাং এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুই করার ছিল না। এবার জিতলে বিষয়টি সংসদে নিয়ে যাবেন রচনা বলে আশ্বস্ত করেছেন।