বলিউডে এমন একাধিক ছবি, সিরিজ, সিনেমা হচ্ছে যেগুলো মহিলা কেন্দ্রিক। জীবনের লড়াই মহিলাদের জিততে দেখিয়েছে। ‘থাপ্পড়’, ‘পিঙ্ক’, ‘আকিরা’, ‘মেরি কম’, ‘দঙ্গল’, সহ আরও অনেক ছবির নাম করা যায়। ‘শিবানী শিবাজী রাও’য়ের মতো চরিত্র পেয়েছি। কিন্তু পর্দায় যতই মহিলাদের দাপট দেখা যাক বা কেন বলিউডে কিন্তু আদতেই পুরুষদের রাজ চলে।
প্রোডাকশন থেকে পরিচালনা, ফ্যাশন থেকে অন্যান্য বিভাগে হাতে গোনা মাত্র কয়েক জন মহিলাদের লিডার রয়েছেন। মিডিয়া হাউজ যেগুলো রয়েছে সেখানেও সিনিয়র হাউজে মাত্র ১০ শতাংশ মহিলা আছেন।
আর মহিলারা এই শীর্ষ স্থানীয় পদে না থাকার দরুন প্রোডাকশন এবং এক্সিকিউসনে তার একটা প্রভাব পড়ছে। মাত্র ১৩ শতাংশ মহিলা আছেন OTT ফিল্মের নেতৃত্বে। ১৬ শতাংশ মহিলা আছেন ওয়েব সিরিজের ক্ষেত্রে। আর সিনেমার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা কত জানেন? মাত্র ৩ শতাংশ।
তবে বাস্তব চিত্র যাই হোক না কেন ছবি বা মূলত সিরিজে কিন্তু বদল আনা হচ্ছে। সেখানে মহিলা কেন্দ্রিক ছবি বানানো হচ্ছে। কিন্তু সমস্যাটা বাস্তবে থেকেই যাচ্ছে।
এই বিষয়ে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিয়োর ইন্ডিয়া অরিজিন্যালের হেড অপর্ণা পুরোহিত বলেছেন, 'এটা বাস্তব যে বহুদিন, বহু বছর ধরেই পুরুষরা ভারতীয় ছবিতে বিনিয়োগ করেছেন, প্রযোজনা করেছেন, প্রচার করেছেন, পরিচালনা করেছেন। ফলে এক্ষেত্রে সিনিয়ররা অধিকাংশ সকলেই পুরুষ। এছাড়া আরও একটি ভাবনা হল, অনেকেই ভাবেন মহিলারা কাজ এবং সংসার একসঙ্গে সামলাতে পারেন না। সেই কারণেই মহিলাদের অত বেশি করে নেতৃত্বে দেখা যায় না।'
তিনি তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, 'আমাদের চুপ করে থাকার শর্ত দেওয়া হয়। কথা বলতে দেওয়া হয় না, প্রশ্ন করতে দেওয়া হয় বা। এক ঘর পুরুষের সামনে প্রশ্ন করার আগে আমরা নিজেরাও নিজেদের সঙ্গে লড়াই করি। একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ি। নিজেকে জিজ্ঞেস করি এই প্রশ্ন করা ঠিক হবে, পাত্তা দেবে আমার প্রশ্নকে? আমি কি আদৌ এই প্রশ্ন করব?'
‘স্কুপ’ বা ‘থাপ্পড়’ -এর লেখক মৃন্ময়ী লাগু উকিল বলেন, 'সমস্যা আরও একটা আছে। অনেক শিক্ষিত মহিলারা নিজেদের হকের কথা বলতে পারেন না। নিজের নাম দেওয়ার কথা বলতে পারেন না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আমার মতো কিছু মানুষ সেটা পারে। তাই তো হংসল মেহতার মতো ব্যক্তি স্কুপের সহ নির্মাতা হিসেবে আমার নাম দিয়েছিলেন।'
OML এন্টারটেইনমেন্টের সিইও গুঞ্জন আর্য বলেন রিসোর্স কতটা আছে, সুযোগ কতটা আছে সেটার থেকে অনেক বেশি জরুরি অধিকার, হক।
তিনি আরও বলেন, 'এই ইন্ডাস্ট্রির অদ্ভুত টাইম, অতিরিক্ত চাপ, দিনের পর দিন বাইরে থাকার প্রয়োজনের কারণে এখানে আজও পুরুষদের আধিপত্য দেখা যায়। তাছাড়া জব সিকিউরিটির একটা ব্যাপার তো থাকেই।'