সম্প্রতি হয়ে গেল টেলি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো এবারেও সেই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুধু অনুষ্ঠানের সূচনাই নয়, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পাশাপাশি পুরস্কার পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। যদিও তিনি তা গ্রহণ করেননি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্পী সত্ত্বার, শিল্পের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা এতদিন সকলের জানা। অনেকেই হয়ত জানেন না, গুড্ডি ও জগদ্ধাত্রী ধারাবাহিকের গান লেখা ও সুর দেওয়া সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর তাঁর সেই শিল্পীসত্ত্বাকে স্বীকৃতি দিতেই এদিন টেলি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের মঞ্চে সেরা গীতিকার ও সুরকার হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হয়। তবে পুরস্কার নিতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব ভঙ্গীতে মজার ছলে পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাংলা টেলিভিশনের শিল্পীদের সারা ভারতবর্ষ থেকে ডাক পড়বে। তাঁরা সর্বগুণ সম্পন্ন। মুম্বইতে ডাকা হয় আমাদের শিল্পীদের।’ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে উঠে আসে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, ‘জগদ্ধাত্রী’, ‘রামপ্রসাদ’, ‘গাঁটছড়া’, ‘নিম ফুলের মধু’, ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর মতো ধারাবাহিকের নাম। তবে শুধু নাম বলেই ক্ষান্ত থাকেননি, সিরিয়ালের বর্তমান ট্র্যাক সম্পর্কেও এক্কেবারে আপ টু ডেট মমতা। পর্ণার কেরামতি থেকে সূর্য-দীপার ভুল বোঝাবুঝি কিংবা জগদ্ধাত্রীর মারকাটারি রূপ, সবই ঠোঁটস্থ মুখ্যমন্ত্রীর।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, সারাদিনের ব্যস্ততার পরেও তিনি প্রিয় সিরিয়ালগুলো মিস করেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলা মিডিয়াম থেকে ইষ্টি কুটুম সবই দেখি। অনুরাগের ছোঁয়ায় ওই ছোট্ট দুটি মেয়ে কী সুন্দর কথা বলে।' নীল-তিয়াসার বাংলা মিডিয়ামের বিষয়ভাবনাকেও কুর্নিশ জানান মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'একদিন না দেখতে পেলে ভাবতে থাকি পরের দিন কী দেখাবে।’ ‘রামপ্রসাদ’ সব্যসাচী চৌধুরীর প্রশংসা ঝরে পড়ে তাঁর গলায়। কথার ছলে মজা করতেও ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আর একটা জিনিস তো আপনাদের আছেই। একজনের তিনটে বিয়ে হচ্ছে… আরেকটা কূটকচালি থাকবেই। নেগেটিভ রোল। পসেটিভটাকে নেগেটিভ করে দেওয়া, সিরিয়ালটাকে বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া। আর কেউ যদি চলে যায় তাকে মেরে দেওয়া। এসব আমি দেখলেই বুঝতে পারি’।
তবে সিরিয়াল নির্মাতাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, 'যেহেতু খারাপ জিনিস লোকে বেশি তাড়াতাড়ি গ্রহণ করে, কোনও অপরাধমূলক দৃশ্য দেখানোর পরে, কঠোর শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারটা যদি আপনারা একটু দেখান, তাহলে প্রশাসনের জাগরণ হয় এবং আপনাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরাও অনেক কাজ করতে পারি।'