মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। বাবা-মা'র পছন্দ করা পাত্রর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। কিন্তু সুখের হয়নি দাম্পত্য। বিয়ের দু-বছর পরেই স্বামী প্রমিত সেনের থেকে আলাদা হন স্বস্তিকা। সালটা ২০০০। এরপর কেটেছে ২৪ বছর, কিন্তু কাগজে কলমে আজও ডিভোর্সি নন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। আদালতে ঝুলে রয়েছে মামলা।
বিয়ে ভাঙলেও প্রেমে আস্থা হারাননি স্বস্তিকা। তাঁর প্রেম জীবন সবসময়ই থেকেছে পেজ থ্রি-র পাতা জুড়ে। চল্লিশোর্ধ নায়িকার জীবনে বারবার কড়া নেড়েছে প্রেম, তবে থিতু হয়নি ভালোবাসা। জিৎ, পরমব্রত, সৃজিত থেকে শুরু করে পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্বস্তিকার প্রেম সম্পর্ক নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। বছর কয়েক আগে মীরের সঙ্গে স্বস্তিকার প্রেমচর্চা ডানা মেলেছিল, তবে সে-সব এখন অতীত। প্রাক্তন প্রেমিকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব টিকে রয়েছে স্বস্তিকার, তবে স্বামীর সঙ্গে মুখ দেখাদেখি বন্ধ। আপতত সিঙ্গল নায়িকা। প্রেমদিবসটা কেমন কাটালেন?
অভিনেত্রীর ভ্যালেন্টাইনস ডে স্পেশ্যাল পোস্ট দেখে চোখ ছানাবড়া নেটাপাড়ার। কোনও এক রেস্তারাঁয় বসে রয়েছেন স্বস্তিকা। পিছনে বড় বড় হরফে লেখা, ‘হ্যাপি’ শব্দটি কাটা, পাশে লেখা ‘F**K’ (লেখার অযোগ্য) ভ্যালেন্টাইনস ডে'। সঙ্গে মধ্যমা দেখিয়ে ক্যামেরার সামনে পোজ দিলেন স্বস্তিকা। জানালেন সিঙ্গলহুড দারুণ এনজয় করছেন তিনি।
স্বস্তিকা এই পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘Single people !! F**king rejoice’। একাকীত্বটাকেই আপন করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। মায়ের এহেন কুল অবতার নজর এড়ায়নি মেয়ে অন্বেষার। স্বস্তিকা কন্যা মাকে প্রশংসায় ভরিয়ে লেখেন, ‘মা আমার চেয়ে অনেক বেশি কুল, তা এই ছবিতে প্রমাণিত’। বিদেশে পড়াশোনা করছে অন্বেষা। এখন একাই থাকেন স্বস্তিকা। গত কয়েক বছরে এর জন্য কম স্ট্রাগল করেননি অভিনেত্রী। ছুটতে হয়েছে মনোবিদের কাছেও। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেয়েকে মিস করার প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, 'আমি একদম ভাবি না। ভাবলেই মন খারাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আমি যেহেতু একাই থাকি তখন একাকীত্ব গ্রাস করে আসে। ২০২২ সালে ও (অন্বেষা) প্রথম বাইরে যাওয়ার পর আমার খুব অসুবিধা হয়েছিল। মনকষ্টে কেটেছে। আমি একদম একা থাকতে পারতাম না। কারণ সারাজীবন বাবা-মা'র সঙ্গেই আমার কেটেছে। বাবা মারা যাওয়ার পর কোভিড এল। তখন মেয়ের সঙ্গেই ছিলাম। একা থাকার অভ্যেসটা করতে হয়েছে। এখন আর খুব একটা অসুবিধা হয় না। আমি মনোবিদের কাছে গিয়েছি, আমি থেরাপি নিয়েছি। আমি একা থাকার বিষয়টা হ্যান্ডেল করতে পারছিলাম না। এখন ভালো আছি। এখন একা থাকতে ভালো লাগে। দেড় বছর আগে অনেক স্ট্রাগল করেছি, এখন ম্য়ানেজ করে ফেলেছি।'
টলিউড স্বস্তিকাকে চেনে স্পষ্টবক্তা হিসাবে। প্রেম, ভাঙা বিয়ে, সন্তান হোক বা অন্য কোনও বিষয়- সবেতেই অকপট, অনায়স স্বস্তিকা। দীর্ঘ ফিল্মি কেরিয়ারে বিতর্ক হামেশাই সঙ্গে থেকেছে স্বস্তিকার, সাহস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী। টলিউড ছাড়িয়ে এখন আরব সাগর পারেও নিজেকে সফল অভিনেত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। একদিকে তিনি আবেদনময়ী, অন্যদিকে তাঁর অভিনয় দক্ষতা বরাবরই নজরকাড়া। বক্স অফিসে স্বস্তিকার শেষ রিলিজ ছিল ‘বিজয়ার পরে’।