প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনার গতিবিধি কমায়নি চিন। সম্প্রতি রিপোর্ট পেশ করে এমনটাই বলে পেন্টাগন। ভারত লাগোয়া সীমান্তে চিনা সেনা মোতায়েন থেকে শুরু করে সামরিক পরিকাঠামো নির্মাণের হার আগের মতোই রেখেছে বেজিং। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের খুব কাছেই বাঙ্কার বানিয়ে চলেছে চিনা সেনা। তৈরি হচ্ছে হেলিপ্যাড ও এয়ারফিল্ডও। এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে এবারে মুখ খুলল চিন। আমেরিকাকে তোপ দেগে বেজিং বলল, 'আমেরিকা হল শান্তি ও স্থিতিশীলতার সবচেয়ে বড় বিঘ্নকারী শক্তি।' উল্লেখ্য, কয়েকদিনেই আমেরিকা সফরে যাওয়ার কথা চিনা বিদেশমন্ত্রীর। এর আগে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে ওয়াশিংটনকে তোপ দাগা হয়েছে। এদিকে তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্যেও আমেরিকাকে আক্রমণ শানিয়েছে বেজিং।
উল্লেখ্য, পেন্টাগনের রিপোর্ট বলছে, ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় পিএলএ রাস্তা থেকে শুরু করে ভূগর্ভস্থ স্টোরেজ সেন্টার, হেলিপ্যাড, এয়ারফিল্ড তৈরি করে চলেছে। পাশাপাশি বেশ কিছু গ্রামও গড়ে তোলা হচ্ছে সীমান্তের কাছে। এই সব গ্রামকে সামরিক কাজে ব্যবহার করছে পিএলএ। এদিকে চিনের হাতে আপাতত ৫০০-র বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটা ১০০০ ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে গত অগস্টেই আকসাই চিনের উপগ্রহ মানচিত্র প্রকাশ্যে এসেছিল। ম্যাক্সার-এর সেই উপগ্রহ মানচিত্রে দেখা গিয়েছে, আকসাই চিন এলাকায় মাটির নীচে বাঙ্কার তৈরি করেছে চিনা সেনা। মাটির নীচে আরও বেশ কিছু সামরিক স্থাপত্য গড়ে তুলেছে তারা। কোনও মিসাইল হামলার ক্ষেত্রে যাতে তাদের সামরিক পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা চিন।
উল্লেখ্য, বিগত তিনবছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অস্থির পরিস্থিতি। ভারত ও চিনা সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দিনরাত। এরই মধ্যে বারংবার ফুটে উঠেছে চিনের আগ্রাসী মনোভাব। সীমান্তে শান্তি ফেরাতে যেখানে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আচোলনা চলছে, সেখানে চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার খুব কাছেই বায়ুসেনা ঘাঁটি বানিয়ে চলেছে। জানা যায়, ২০২০ সালের মে মাস থেকেই চিন বায়ুসেনা ঘাঁটি তৈরির দিকে নজর দিয়েছিল এই অঞ্চলে। শুধু এয়ারফিল্ড নয়, লাদাখের আশেপাশে হেলিপ্যাড, রেললাইন, মিসাইল বেস, সড়ক, সেতু নির্মাণ করে চলেছে চিন। পাশাপাশি এই এলাকায় সেনার সংখ্যাও বাড়িয়ে চলেছে চিন। এর আগে 'প্ল্যানেট ল্যাব'-এর একটি উপগ্রহ চিত্র হিন্দুস্তান টাইমসের হাতে এসেছিল। তা থেকে দেখা যায়, হোতান, নগারি গুনসা এবং লাসায় বায়ুসেনা ঘাঁটিকে আরও উন্নত করেছে চিন।
২০২০ সালের ২৩ জুন হোতান বায়ুসেনা ঘাঁটির উপগ্রহ চিত্র থেকে দেখা গিয়েছে যে এর আশেপাশে সেনার কোনও পাকা বাড়ি নেই। তবে ২০২৩ সালের ১৮ মে-এর চিত্রে দেখা গিয়েছে, সেখানে নতুন এয়ার বেস গড়ে তোলা হয়েছে। মিলিটারি অপারেশনের জন্যও নয়া বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। আরও বেশি সংখ্যক যুদ্ধবিমান রাখার জন্য নয়া 'অ্যাপ্রন' তৈরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই হোতান হল আকসাই চিনের উত্তরে শিনজিয়াং প্রদেশে অবস্থিত। সেখান থেকে লাদাখ খুবই কাছে।