১৮ মাস বয়সী মেয়েসন্তান খুন হয়েছে নিজের বাবা মায়ের হাতে। মুম্বরায় অভিযুক্ত ওই দম্পতিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দম্পতি বিরুদ্ধে তাঁদের ১৮ মাস বয়সী মেয়েকে হত্যা করে কবরস্থানে গিয়ে লাশ কবর দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই দুই অভিযুক্তের নাম জাহিদ শেখ ও নূরানী শেখ। জাহিদ শেখ, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা, কয়েক মাস আগে স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে মুম্বরার শিবাজি নগর এলাকায় ভাড়ায় থাকতে এসেছিলেন। শেখ চেম্বুরের একটি মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি মুম্বরার মাদ্রাসায় শিক্ষকতাও করেন।
আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আদালত দম্পতিদের দুজনকে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৮ মার্চ ১৮ মাসের একরত্তি লাবিবা শেখকে তার বাবা মাই খুন করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ প্রসঙ্গে একটি বেনামী চিঠি পেয়েছিলেন, তারপরেই প্রকাশ্যে এসেছে সত্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে থানের মুম্বরা পুলিশ।
বেনামী ওই চিঠিতেই লুকিয়ে রহস্য
জানা গিয়েছে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এক ব্যক্তি ডিসিপি ও মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠিতে লেখা ছিল যে লাবিবাকে হত্যার পর তাঁর লাশ কবরস্থানে কবর দেওয়া হবে। চিঠিতে লাবিবার ছবিও ছিল। মোবাইল নম্বরও ছিল। চিঠিতে লেখা মোবাইল নম্বরে পুলিশ যোগাযোগ করলে সেই নম্বরটি সুইচড অফ পাওয়া যায় এবং ঠিকানাও ছিল পুরো ভুল। সন্দেহ হওয়ায় তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। এরপর মুম্বরার কবরস্থান ও হাসপাতাল তল্লাশি করা হয়েছিল। এরপর তদন্তের সময় ১৮ মার্চ, মুম্বরার সুন্নি কবরস্থানে ১৮ মাস বয়সী বাচ্চা মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। কবরস্থানের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে পুলিশ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে ওই চিকিৎসকরা পুলিশকে বলেছিলেন যে ১৮ মার্চ, একটি আহত বাচ্চা মেয়েকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরেও অবস্থার উন্নতি না হতে দেখে, তাকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। কীভাবে এত আঘাত লেগেছে জিজ্ঞাসা করায় বাচ্চাটির বাবা মা বলেছিলেন যে তাঁদের মেয়ে ঘরে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। কিন্তু বাচ্চাটির উপর আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে ডাক্তাদের সে কারণ বিশ্বাস হয়নি।
ডাক্তারদের বক্তব্য শুনে লাবিবার বাবা মাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে দুজনেরই দেওয়া চোটের কারণ ও ডাক্তাদের দেওয়া কারণের মধ্যে বড়সড় ফারাক নজর কেড়েছিল। এর পরে, পুলিশ ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইপিসির ধারা ২০১, ৩০২ এবং ৩৪ নং ধারায় মামলা দায়ের করেছে।
- বাচ্চাটিকে খুন করার কারণ কী
হত্যার পেছনের কারণ এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, মেয়ে হওয়ায় তাকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। কারণ, এই দম্পতির আরও দুটি কন্যার মধ্যে দ্বিতীয় মেয়ের জিভ কেটে ফেলা হয়েছে বলেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই মেয়েটির মাথায়ও একই ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই পুলিশের সন্দেহ, শেখ দম্পতি তাঁদের দ্বিতীয় মেয়েকেও হয়ত হত্যার চেষ্টা করতে পারেন।