বরকি-ইদের আগে প্রায় ২৫০টি ছাগল কিনে ফেলল উত্তরপ্রদেশের বাগপতের জৈন সম্প্রদায়ের লোকজন। এরপর সেগুলিকে বকরাশালাতে পাঠানো হয়েছে। এখানেই থাকবে ছাগলগুলো। সেখানেই লালন পালন করা হবে ছাগলগুলিকে। কিন্তু বকরি-ইদের আগে কেন ছাগল কিনল জৈন সম্প্রদায়?
গত ২৮ জুন তারা এই ছাগলগুলিকে কিনে নেয়। আসলে ইদের আগে এই ছাগলগুলিকে বিক্রি করা হত। মূলত বিশেষ কারণে এই ছাগলগুলিকে কিনে নিয়ে যান মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। সেই ছাগলগুলিকে যাতে মেরে ফেলা বা জবাই করা না হয় সেকারণে সেগুলিকে জৈন সম্প্রদায় কিনে নেয়। কারণ জৈনরা বরাবরই প্রাণী হত্যার বিরোধী। তারা কোনও দিন প্রাণী হত্যাকে সমর্থন করে না। অত্যন্ত ক্ষমাশীল আচরণ পালন করেন তাঁরা। এবার সেই ছাগলগুলিকে রক্ষা করার জন্য় তাঁরা সেগুলিকে কিনে নেন। এরপর সেগুলিকে পালন করার জন্য় নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দেন।
ছাগল রক্ষার জন্য় জৈন সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে উঠেছিল। ২০১৬ সাল থেকে এটা কাজ করছে। জীব দয়া সংস্থা বলে পরিচিত এই সংস্থা। জীবে দয়া করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। এই ভাবধারাকে পাথেয় করেন অনেকে। ভগবান মহাবীর জৈনর আদর্শের উপর চলে এই সংগঠন। তারা প্রাণী হত্যার বিরোধী। তাঁরাই ছাগল রক্ষার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান। সূত্রের খবর ৪০-৫০ টি ছাগল নিয়ে তারা পথ চলা শুরু করেছিলেন। আর এখন তাঁদের কাছে প্রায় ৫০০ ছাগল রয়েছে। সেই ছাগলগুলিকে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তারা প্রতিপালন করেন। অনেকেই তাঁদের কাছে ছাগল দান করে। সেগুলি তারা ওইখানে রেখে দেন।
এদিকে বকরি-ইদের আগে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন সাধারণত ছাগল কিনে নিয়ে যান। তবে সেই ছাগলগুলিকে রক্ষার করার জন্য় এগিয়ে এলেন তারা।
এদিকে এই ছাগলদের দেখভাল করার জন্য় রীতিমতো চিকিৎসকরাও রয়েছেন। তারা নিয়মিত ছাগলদের উপর নজর রাখেন। প্রায় ৫০০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে নতুন করে এই ছাগল রাখার জায়গা গড়ে উঠেছে।
তবে এই যে ছাগল রক্ষা নিয়ে তাদের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনও বিরোধিতা বা দ্বন্দ্বও নেই। তাঁদের মতে, সংবেদনশীল মানুষ তাঁদের এই কাজকে সমর্থন করেন। এতে তাঁদের কাজ করতে অনেকটাই সুবিধা হয়। তবে উত্তরপ্রদেশেই নয়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটেও এই ধরনের ছাগল সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।