বিজেপি সাংসদ ধরমবীর সিং লোকসভায় লিভ-ইন সম্পর্ককে ‘বিপজ্জনক রোগ’ বলে বর্ণনা করেছেন। সমাজ থেকে লিভ-ইন রিলেশনশিপ দূর করতে সরকারকে আইন করারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি ধরমবীর সিং বলেছেন যে, প্রেমের বিয়েতে বিবাহবিচ্ছেদের হার বেশি, তাই এই ধরনের সম্পর্কের জন্য ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের পিতামাতার সম্মতি বাধ্যতামূলক করা উচিত।
হরিয়ানার মহেন্দ্রগড়ের বিজেপি সাংসদ ধর্মবীর সিং বৃহস্পতিবার শীতকালীন অধিবেশনে লিভ-ইন সম্পর্কের বিষয়ে তার মতামত তুলে ধরেন। এর বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি। লোকসভায় ‘জিরো আওয়ার’-এ এই প্রসঙ্গ তোলেন বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, আজও সমাজের একটি বড় অংশ বাবা-মা বা আত্মীয়স্বজন দ্বারা সম্বন্ধ করা বিয়েকে অগ্রাধিকার দেয়।
তাঁর কথায়, ‘আমি সরকার ও সংসদের নজরে একটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয় আনতে চাই। ভারতীয় সংস্কৃতি বাসুধৈব কুটুম্বকম এবং ভ্রাতৃত্বের দর্শনের জন্য পরিচিত। আমাদের সামাজিক কাঠামো বিশ্বের অন্যদের থেকে আলাদা। বৈচিত্র্যের মধ্যে আমাদের ঐক্য দেখে সমগ্র বিশ্ব মুগ্ধ। বিয়ে একটি পবিত্র সম্পর্ক হিসেবে এখানে বিবেচিত হয় যা সাত জন্ম ধরে চলে। ভারতে বিবাহবিচ্ছেদের হার প্রায় ১.১ শতাংশ যেখানে আমেরিকায় এই হার প্রায় ৪০ শতাংশ। দেখা গিয়েছে সম্বন্ধ বিয়েতে বিচ্ছেদের হার খুবই কম। ইদানীং আমাদের দেশে বিবাহবিচ্ছেদের হার বেড়েছে, আর এর প্রধান কারণ প্রেমের বিয়ে। তাই আমি পরামর্শ দিচ্ছি, প্রেমের বিয়েতে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের অভিভাবকের সম্মতি বাধ্যতামূলক। কারণ দেশের বড় অংশে একই ‘গোত্রের’ মধ্যে বিয়ে হয় না। প্রেমের বিয়েকে কেন্দ্র করে গ্রামে অনেক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এসব দ্বন্দ্বে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়, তাই উভয় পরিবারের সম্মতি জরুরি।
এর পর লিভ-ইন রিলেশন নিয়ে কথা বলেন ধরমবীর সিং। তিনি এটিকে একটি ‘ বিপজ্জনক রোগ’ বলে অভিহিত করেন। তাঁর কথায়, ‘একটি নতুন রোগ দেখা দিয়েছে এবং এই সামাজিক কুফলকে বলা হচ্ছে ‘লিভ-ইন রিলেশনশিপ’। এতে নারী-পুরুষ বিয়ে ছাড়াই একসঙ্গে বসবাস করে। এই ধরনের সম্পর্ক পশ্চিমা দেশগুলিতে খুব সাধারণ। কিন্তু আমাদের সমাজেও এই অপশক্তি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এবং এর পরিণতি ভয়াবহ।’
বিজেপি সাংসদ এখানে শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলার কথা উল্লেখ করেন। গত বছর দিল্লিতে প্রেমিক আফতাবের হাতে খুন হন শ্রদ্ধা। দু’জনেই লিভ ইন রিলেশনশিপে বসবাস করছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। ধরমবীর সিং দাবি করেছেন, ‘লিভ-ইন সম্পর্ক শুধু আমাদের সংস্কৃতিকেই ধ্বংস করছে না, সমাজে ঘৃণা ও খারাপ জিনিসও ছড়াচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের আর অন্যদের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকবে না।’ এর পরেই সাংসদ লোকসভায় সরকারকে অনুরোধ করেন যে লিভ-রিলেশনশিপের বিরুদ্ধে একটি আইন করা উচিত। এটি বন্ধ করা উচিত।