পঞ্জাবের জলন্ধর জেলায় তিন বোনের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই তিন বোনকে বিষ খাইয়ে খুন করে একটি পরিত্যক্ত ট্রাঙ্কে রেখে দিয়েছিল তাদের বাবা-মা। এই ঘটনায় তিন বোনের বাবা সুনীল মণ্ডল এবং মা মঞ্জু মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, রবিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল অমৃতা কুমারী (৯), কাঞ্চন কুমারী (৭) এবং ভাসু (৩) নামের তিন বোন। পরের দিন তাদের দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন:ঋণ শোধ করতে গয়না ছিনতাইয়ের পর ২ বছরের শিশুকে খুন করে গঙ্গায় ফেলে দিলেন প্রতিবেশী
পঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার জলন্ধর জেলার কানপুর গ্রামে তাদের বাড়িতে একটি ট্রাঙ্কের মধ্যে তিন বোনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ওই শিশুদের বাবা-মা রবিবার রাতে কাজ থেকে ফিরে তিন মেয়েকে দেখতে না পেয়ে মাকসুদন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। এরপর ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তিন বোনের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুর করে দেয় পুলিশ। শেষে তাদের ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে একটি পুরনো ট্রাঙ্ক দেখতে পায় পুলিশ। সেটি তালা বন্ধ ছিল না এবং সেটি খুব ভারী ছিল। এরপর পুলিশ ট্রাঙ্ক খুলতেই সেখান থেকে পরপর তিন বোনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এরপরে মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে ওই দম্পতিকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বাড়ির মালিকের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল।
তাদের দাবি ছিল, সুশীল বাড়িতেই মদ্যপান করত। আর তাতে আপত্তি জানিয়েছিলেন বাড়ির মালিক। তিনি তাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু, বাড়ি ছাড়তে রাজি হয়নি সুশীল। সেই নিয়ে তাদের মধ্যে বচসা হয়। সেই কারণে বাড়ির মালিক তাদের মেয়েদের খুন করেন বলে ওই দম্পতি অভিযোগ করেছিল।
কিন্তু, ঘর থেকেই দেহ উদ্ধার হওয়ায় তাদের উপরে সন্দেহ হয় পুলিশের। এর পরেই পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় দম্পতি। পুলিশকে তারা জানায়, অভাবের সংসারে মেয়েদের ভরণ পোষণ করতে পারছিল না ওই দম্পতি। সেই কারণে তিন মেয়েকে তারা বিষ খাইয়ে খুন করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পত্তি বিহারের বাসিন্দা। তারা কাজের সূত্রে পঞ্জাবে থাকত। তাদের আরও দুই ছেলে রয়েছে। সিনিয়র পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মুখবিন্দর সিং ভুলার জানিয়েছেন, তিন বোনের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এই ঘটনার আরও তদন্ত করা হচ্ছে।